দেশের সিংহভাগ মানুষের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন, তদারককারী প্রতিষ্ঠান আরইবির স্বেচ্ছাচারিতা অনিয়ম দুর্নীতির কারণে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে সংস্থাটিতে। এতে গ্রাহক ভোগান্তির পাশাপাশি কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এসব অভিযোগ করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন।
আন্দোলনের অন্যতম স্বমন্বয়ক প্রকৌশলী রাজন কুমার দাস অভিযোগ করেন, টেকসই, আধুনিক ও যুগোপযোগী বিতরণ ব্যবস্থা বিনির্মাণের লক্ষ্যে চলতি বছরের শুরু থেকে আরইবি-পবিস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং সকল চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের ২ দফা দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলমান। আন্দোলনের যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে সরকার তথা বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক পল্লী বিদ্যুৎ সিস্টেমের সংস্কার সময়ের দাবি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৈষম্যমুক্ত নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশের প্রতিটি সেক্টরকে সংস্কারের সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। আরইবির ৪৭ বছরের পুরনো সিস্টেমের সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কারসহ অন্যান্য সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হলেও দৃশ্যত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
আরইবির পক্ষ থেকে রিফর্ম সংক্রান্ত কোন প্রস্তাব দাখিল করা হয়নি। শুধু তাই নয়; আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ দেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে আরইবি। অর্থাৎ সরকারের পক্ষ থেকে সমাধানের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও নানান বাহানায় কালক্ষেপণ এবং সংস্কারে অস্বীকৃতি জানিয়ে চরম বিপত্তি সৃষ্টি করে বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)।
রাজন কুমার দাস আরো অভিযোগ করেন, বিগত কয়েক মাস যাবত প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের ব্যবস্থা না করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে আরইবি। যে কারণে মাঠ পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো মালামালের অভাবে (মিটার, ট্রান্সফরমার, তার ইত্যাদি) নতুন সংযোগ সহ সঠিকভাবে গ্রাহক সেবা প্রদান করতে পারছে না। আরইবির কর্তৃক নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় জনবল ও যানবাহনের ব্যবস্থা না করার কারণে গ্রাহক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। ভুক্তভোগী হচ্ছেন গ্রাহক এবং সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারী। যার ফলে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মনে আরইবি’র প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
এমতাবস্থায় দ্বৈতনীতি পরিহার করে অবিলম্বে আরইবি-পবিসকে একীভূত করাসহ দুই দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ০১ অক্টোবর থেকে গ্রাহক সেবা চালু রেখে বাপবিবোর্ডের সাথে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল ধরনের যোগাযোগ, তথ্য সরবরাহ থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয়া হয়। এসময় এজিএম আব্দুল হাকিম, এজিএম সালাহ উদ্দিনসহ ঢাকা অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন