দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীর মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেছে সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল তিনটা থেকে এ মানববন্ধন শুরু হয়। মিরপুর থানার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শতাধিক সহকারী শিক্ষক এতে অংশ নেন।
বিকেল ৫টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে শিক্ষকদের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মো. আব্দুল হাকিম বরাবর স্মারকলিপি দেন। এ সময় তিনি দ্রুত গ্রেড বৈষম্য নিরসনের আশ্বাস দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালের বেতন স্কেল ও বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শিক্ষকদের স্বাভাবিক জীবনমান বজায় রাখতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করার মাধ্যমে এর কিছুটা সমাধান সম্ভব।
তারা বলেন, সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বর্তমানে ১৩তম গ্রেডে বেতন পান। অন্যদিকে সব পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় ১০ম গ্রেড-এ আছেন। পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একই শিক্ষাক্রমে পাঠদান ও একই পদ্ধতিতে মূল্যায়ন কার্যক্রম করেও আমাদের চেয়ে গ্রেড ব্যবধানে এগিয়ে। আবার এইচএসসি ও ডিপ্লোমা যোগ্যতায় নার্স ১০ম গ্রেড, এসএসসি ও ৪ বছরের ডিপ্লোমা যোগ্যতায় উপসহকারী কৃষি অফিসার ১০ম গ্রেড, বাংলাদেশ পুলিশের এসআইতে স্নাতক যোগ্যতায় ১০ম গ্রেড, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় ১০ম গ্রেড পেলেও আমরা বৈষম্যের শিকার।
সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ও শেরেবাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান কালবেলাকে বলেন, আমরা একই যোগ্যতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও তৃতীয় শ্রেণির গ্রেডে বেতন পাচ্ছি। অথচ সমান যোগ্যতায় অনেকেই ১০ম গ্রেডে বেতন পাচ্ছে। এটা স্পষ্টত বৈষম্য।
তিনি বলেন, মেধাবীরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের পদে যোগদানের কিছুদিন পরে স্বল্প বেতনে সংসার চালানো সম্ভব নয় বলে চাকরি ছেড়ে দেয়। ১০ম গ্রেড পেলে তারা কখনোই এভাবে চলে যেতেন না। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। কিন্তু তাদের তৃতীয় শ্রেণিতে রেখে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা সম্ভব নয়। তাই আমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিজের অধিকার আদায়ে মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা তৃতীয় শ্রেণির গ্লানি থেকে মুক্তি পেতে চাই।
মন্তব্য করুন