মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাইদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেছেন, জলাতঙ্ক রোগ সাধারণত কুকুর, বিড়াল, শিয়াল ও বাদুড়ের আঁচড় বা কামড় থেকে হতে পারে। একবার এই রোগ হলে মৃত্যু অবধারিত। এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে পোষা প্রাণীকে টিকা দেওয়ার বিকল্প নেই।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশন (বিভিএ) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিএ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল চত্বরে বর্ণাঢ্য র্যালি ও সচেতনতামূলক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিভিএর সদস্য সচিব ডা. মো. তারেক হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভিএর আহ্বায়ক ডা. সফিউল আহাদ সরদার। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাঈদ মাহমুদ বেলাল বলেন, মানুষ এবং পশু উভয়ই জলাতঙ্ক রোগের ভয়াবহতার শিকার হতে পারে। রোগটি সাধারণত কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বাদুড় ইত্যাদি প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একবার এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে মৃত্যু প্রায় অবধারিত। এই রোগ থেকে বাঁচার সহজ উপায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও পোষা প্রাণীকে টিকা দেওয়া।
তিনি প্রাণী কল্যাণ কাজে নিয়োজিত ভেটেরিনারিয়ানদের নিজেদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তাসহ রোগটি নির্মূলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্ব থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগটি দূর করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন জনসচেতনতা ও সমন্বিত উদ্যোগ। প্রাণিস্বাস্থ্য ও মানব স্বাস্থ্যের যৌথ ও সফল উদ্যোগের মাধমেই কেবল সঠিক সময়ে জলাতঙ্ক দূর করা সম্ভব।
আলোচনা সভায় ডা. শফিউল আহাদ সরদার বলেন, জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে কার্যকর টিকা এবং সহজলভ্য চিকিৎসা সরঞ্জামের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের সহজলভ্যতা বাড়াতে এবং চিকিৎসা সেবার উন্নয়নে গবেষণা ও বিনিয়োগ করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, এবারের দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘জলাতঙ্ক নির্মূলে প্রয়োজন, সব প্রতিবন্ধকতা নিরসন।’ জলাতংক রোগ নির্মূলে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলো অতিক্রম করে একটি সুস্থ ও নিরাপদ সমাজ গঠন করা জরুরি। শুধু কুকুরের টিকা দেওয়া ও সচেতনতা বৃদ্ধি নয়, বরং ভ্যাক্সিনের সহজলভ্যতা, সঠিক চিকিৎসা দিয়ে গবাদিপশু থেকে শুরু করে মানুষের মধ্যে র্যাবিস সংক্রমণ প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সভার শুরুতে জলাতঙ্ক রোগের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. নাজমুল এইচ নাজির। প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন ভেটেরিনারি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব ডা. কবির উদ্দিন আহমেদ, দি ভেট এক্সিকিউটিভের আহ্বায়ক ডা. মো. রেজাউল করিম মিয়া, বিভিএর আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. মাহাবুবুর রহমান।
মন্তব্য করুন