মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে তারা বৈঠক করেন। বৈঠকে মালদ্বীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ড. ইউনূস। খবর বাসস
এ সময় দুই নেতা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, সার্ক সক্রিয়করণ, জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণা সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা মালদ্বীপের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্কের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুতর প্রভাবসহ অনেক কিছু ভাগ করে নিয়েছে।
জলবায়ু সংকটের কারণে উদ্ভূত বিপদের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের পুরো অস্তিত্বই ঝুঁকির মুখে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট দেশের নির্মাণ ও পর্যটন খাতে বাংলাদেশের শ্রমিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
মোহাম্মদ মুইজু বলেন, দুদেশ পর্যটন, মৎস্যসম্পদ এবং জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করতে পারে। তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করার আহ্বান জানান।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করলে তা দুদেশের মানুষের জন্য উপকারী হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি সার্কের সক্রিয়তাকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ঘনিষ্ঠ সংহতকরণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখতে চান। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা কাছাকাছি থাকব। আমাদের দূরে থাকা উচিত নয়।
এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস বলেছেন জলবায়ু সংকট মোকাবিলার পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের মতো জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য শক্তিশালী সম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলায় দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে আমাদের জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তিগুলোর সুবিধা দরকার, বিশেষত কৃষি, পানি বা জনস্বাস্থ্যে, যেখানে পরিমিত সমাধান বা উদ্ভাবন লাখ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সবার জন্য অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই গ্রীষ্মে স্মরণকালের তাপপ্রবাহ বিশ্বকে জলবায়ু-প্ররোচিত পরিবর্তনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো জলবায়ুতে ন্যায়বিচার। যাতে দায়িত্বজ্ঞানহীন পছন্দ বা উদাসীন পদক্ষেপ বা ক্ষতির হিসাব করা হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি চারদিকে অপূরণীয় ক্ষতি করে। আমরা জীববৈচিত্র্য হারাচ্ছি, রোগজীবাণু পরিবর্তন নতুন রোগের দিকে পরিচালিত করে, চাষাবাদ চাপে পড়ছে, পানিসম্পদের সংকোচন আবাসস্থলের জন্য হুমকিস্বরূপ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও লবণাক্ততা জীববৈচিত্র্যকে ধ্বংস করছে।
মন্তব্য করুন