হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত সভায় এ কথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঢাকা মহানগর এলাকার প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে ডিএমপি দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি বলেন, প্রাক দুর্গাপূজা, দুর্গাপূজা চলাকালীন এবং প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের পূজাকেন্দ্রিক নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পূজা চলাকালে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট, ক্রাইসিস রেসপন্স টিম, কুইক রেসপন্স টিম, ক্রাইম সিন ভ্যান ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।
এ সময় পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পূজার সময় পূজামণ্ডপগুলোতে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি সক্রিয় রাখতে হবে। প্রতিটি মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ অথবা নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ বলেন, আমরা সেই বাংলাদেশের প্রত্যাশা করি, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ নির্বিঘ্নে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার বলেন, দুর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর এলাকার প্রতিটি মন্দিরের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে ডিএমপি।
এ সময় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) সানা শামীনুর রহমান পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সার্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ডিএমপির নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। উপস্থিত পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসানসহ পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সভায় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সহসম্পাদক স্বামী শান্তি করাণেন্দু মহারাজ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সহসভাপতি গোপালচন্দ্র দেব নাথ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার বসু রায় চৌধুরী (পিন্টু) ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথসহ ডিএমপির ঊর্ধতন কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন