জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ধর্মীয় বিষয় না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্ম টেনে আনা এবং চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অমর্যাদাকর ভাষায় কাউকে লাঞ্ছিত করা একদিকে যেমন শান্তিপূর্ণ অবস্থার মাঝে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি ও উসকানিমূলক আচরণ। অপরদিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন মর্মে কমিশন মনে করে।
বাংলাদেশের মতো অসাম্প্রদায়িক দেশে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি গুরুতর অপরাধ জানিয়ে তা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মনে করে, জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের উদ্ভব হলে তা পুলিশ কিংবা সংশ্লিষ্ট আদালতের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা যেত। তা না করে এ ধরনের মন্তব্য গুরুতর অপরাধ। এ বিষয়ে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনাপূর্বক সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের সামনে ওয়ারিশদের মধ্যে দোকানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের শিকার উক্ত রেস্টুরেন্টের মালিক এবং পরিচালক সুনীল কুমার দত্ত ও তার কর্মচারীরা।
জানা যায়, সুনীল দত্ত ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে ২টি দোকান ভাড়া নিয়ে সেখানে মা রাঁধুনী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট চালু করেন। পরে রেস্টুরেন্টটির পেছনের দিকে মৌখিক চুক্তিতে আরও সম্প্রসারণ করেন। এতে তাকে মাসিক মোট ৬০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হতো।
কিন্তু দোকানের প্রকৃত মালিক পাঁচ ভাই এর মধ্যে এক ভাই মারা গিয়েছেন, যার সাথেই মূলত ভাড়ার চুক্তি হয়েছিল। পরবর্তীতে মৃত ভাইয়ের স্ত্রী এবং অন্য ৪ ভাইয়ের মধ্যে মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের উদ্ভব হলে রেস্টুরেন্টের মালিক সুনীল দত্ত কাকে ভাড়া পরিশোধ করবেন তা বুঝে উঠতে না পেরে বেশ কিছু মাস ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন। এতে তাকে ও তার কর্মচারীদের কখনো ঢাকা কলেজের সমন্বয়ক পরিচয়ে কিংবা কোন রাজনৈতিক পদধারী ব্যক্তিসহ কে/কারা চাঁদা দাবিসহ দোকান থেকে বের করে দিতে কিছু আপত্তিকর ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর অবস্থান পরিলক্ষিত হয়।
সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, এ ঘটনায় ধর্মীয় উত্তেজনা যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়াসহ বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ অবস্থায়, অভিযোগে উল্লিখিত ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে অবহিত করার জন্য পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা-কে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন