শাওন সোলায়মান, নিউইয়র্ক থেকে
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৪ এএম
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : সংগৃহীত

সামরিক জান্তার অত্যাচারের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রথম দিনেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভা করেন তিনি। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টায় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতিসংঘে ড. ইউনূসের নানান কার্যক্রমের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা যে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে, তারই বহিঃপ্রকাশ প্রথম এই বহুপাক্ষিক সভা।

সাধারণ অধিবেশনের সাইড ইভেন্টে এই সভার সহ-আয়োজক ছিল ইন্দোনেশিয়া, গাম্বিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে কী-নোট স্পিকার হিসেবে নিজ বক্তব্যে তিনটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় সব অংশীজনদের নিয়ে দ্রুততম সময়ে কনফারেন্স আয়োজন করতে পারেন। এই কনফারেন্স সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সৃজনশীল এবং অগ্রবর্তী পন্থা নির্ধারণ করবে।

দ্বিতীয়ত, জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের মধ্যেকার ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান’ আরও বেগবান করতে হবে এবং সবশেষে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হওয়া গণহত্যার মতো অপরাধের বিচার ও জবাবদিহিতাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন করতে হবে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবছর ৩২ হাজার নতুন জন্ম নেওয়া শিশু বাংলাদেশের জনসংখ্যায় যুক্ত হচ্ছে। বিগত ২ মাসেই নতুন করে ২০ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার পাশাপাশি এই সংকট বাংলাদেশের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত হুমকি বহন করছে। বিষয়টি প্রথাগত এবং অ-প্রথাগত নিরাপত্তা সংকটেরও জন্ম দিচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকটে থমকে আছে বাংলাদেশের নিজস্ব উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা। বাংলাদেশ তার সক্ষমতার চূড়ান্তে পৌঁছেছে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, অদ্যবধি জাতিসংঘের একাধিক সাধারণ অধিবেশন, মানবাধিকার কাউন্সিল এমনকি নিরাপত্তা পরিষদও মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ এবং সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমারে সংকটের মূল সমস্যার সমাধান না হওয়ায় কোনো উদ্যোগই কাজে আসেনি এবং বিগত ৭ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যুবকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পুরো বিষয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকির নতুন স্তর যোগ করেছে। মিয়ানমারে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেখানে সব সম্প্রদায়ের জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

সব শেষে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার, মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিয়ে অংশীজনদের সাথে একত্রে কাজ করার বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনঃব্যক্ত করেন অধ্যাপক ইউনূস। রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে সংকটের উত্তরণের বার্তা দিয়ে নিজ বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

শতাধিক যোদ্ধার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন : সারজিস

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে এবি পার্টির শোক

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত

লেফটেন্যান্ট তানজিম নিহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

অবিলম্বে প্রশাসনকে প্রেতাত্মামুক্ত করতে হবে : প্রিন্স

সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে তথ্য উপদেষ্টার শোক

স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড

প্রেমিককে আটকে রেখে প্রেমিকাকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’

১০

ভারতীয় সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেলেন ড. ইউনূস

১১

ড. ইউনূস-বাইডেন বৈঠক, নতুন উচ্চতায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক

১২

তেলের ড্রাম বিস্ফোরণে যুবকের মৃত্যু

১৩

মধ্যপ্রাচ্যে সেনা পাঠানোর ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

১৪

‘নতুন অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গার সংখ্যা জানে না সরকার’

১৫

মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, গ্রেপ্তার ২৮

১৬

বাইডেনকে যে উপহার দিলেন ড. ইউনূস

১৭

আবু আসাদকে পাসপোর্টের অতি. ডিজি পদে পুনর্বহাল 

১৮

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন / আবু সাঈদের শরীরে গুলির চিহ্ন ও মাথায় গর্ত

১৯

‘প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে নগরীর জলাবদ্ধতা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়’

২০
X