সদ্য নিয়োগের পর আট জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নিয়োগের আদেশ বাতিল করেছে সরকার। আজ বুধবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
সিনিয়র সচিব বলেন, নতুন নিয়োগ দেওয়া ডিসির মধ্যে ৫১ জন আপাতত দায়িত্ব পালন করবেন। বাকিরা যেখানে ছিলেন সেখানেই দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া চার জেলা প্রশাসককে রদবদল করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মোখলেস উর রহমান বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগ দেওয়ার জন্য যোগ্য কর্মকর্তা পাওয়া অনেক কঠিন বলেও মন্তব্য করেন এই সিনিয়র সচিব।
যে জেলার ডিসিদের নিয়োগ বাতিল হয়েছে সেগুলো হলো- লক্ষ্মীপুর, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, শরীয়তপুর, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী ও দিনাজপুর।
নিয়োগপ্রাপ্ত বাতিল হওয়া ডিসিরা হলেন- আরপিএটিসির উপপরিচালক মনোয়ারা বেগমকে রাজবাড়ী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সুফিয়া আক্তার রুমীকে লক্ষ্মীপুর, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব আবদুল আজিজকে শরীয়তপুর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদারকে সিরাজগঞ্জ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাহবুবুর রহমানকে রাজশাহী, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলামকে দিনাজপুর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফারহানা ইসলামকে কুষ্টিয়া ও ‘বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের’ পিডি সাইদুজ্জামানকে জয়পুরহাট।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে রদবদলের হিড়িক পড়ে। গত দুই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক পদেও আসে পরিবর্তন।
গত সোমবার ২৫ জেলায় এবং মঙ্গলবার ৩৪ জেলায়, দুই দফায় ৫৯ নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এরপর থেকেই এই নিয়োগ নিয়ে ঘোর আপত্তি তোলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চিত কর্মকর্তারা।
ডিসি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হট্টগোল করেন উপসচিব পর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা।
৫৯ ডিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করার দাবি জানিয়ে বঞ্চিতদের পক্ষ থেকে বিসিএস ২৫ ব্যাচের কর্মকর্তা নূরুল হাফিজ আজ গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন নিয়োগ দেওয়া অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের পরিবর্তে মেধাবী, যোগ্য ও সৎ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এদিকে একই দাবিতে আজ বুধবারও সচিবালয়ে ক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা বিক্ষোভ করছেন। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তারা।
মন্তব্য করুন