পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. এটিএম তারিকুজ্জামানের অপসারণ দাবি করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) তারিকুজ্জামানের অপসারণের দাবিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা জানান, বহু কষ্ট, ত্যাগ, সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা। শত শত মানুষের এই সুমহান আত্মত্যাগ যদিও আমাদের স্বৈরাচারের শোষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্ত করেছে, সঙ্গে চাপিয়ে দিয়ে গেছে এক সাগর রক্তের ঋণের বোঝা। এই ঋণ কখনো পরিশোধ সম্ভব না হলেও শুধু রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে তাদের সুমহান আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মান প্রদান করা এবং ঋণের বোঝা কিছুটা হলেও হালকা করা সম্ভব। সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের পুঁজিবাদী তোষণ ও শোষণে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত এবং লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে।
তারা জানান, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে আর্থিক খাতকে সুসংহত করতে ও দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য আপনার গৃহীত ইতিবাচক পদক্ষেপ আমাদের মধ্যে আশার আলো জাগ্রত করেছে। বাংলাদেশের আর্থিক খাতকে সুসংহত করা অতীব জরুরি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখনো আর্থিক খাতে প্রশাসনের বিভিন্ন ধাপে স্বৈরাচারদের দোসররা বিদ্যমান আছে এবং নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, যাদের অনতিবিলম্বে অপসারণ করা জরুরি।
শিক্ষার্থীরা জানান, শুধু রাষ্ট্রের সচেতন নাগরিক এবং শিক্ষার্থী হিসেবে দেশের আর্থিক খাতকে সুসংহত ও স্বৈরাচার মুক্ত করতে নিম্নলিখিত দাবির প্রতি গুরুত্বসহকারে আলোকপাত করা আমাদের সবার দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করায় নিম্নোক্ত দাবিটি বাস্তবায়নের জন্য তুলে ধরা হলো-
১. ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার হিসেবে স্বৈরাচার সরকার কর্তৃক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন। তিনি এখনো তার স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন তাই তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অনতিবিলম্বে বাতিল করা হোক।
আপনার গৃহীত ইতিবাচক পদক্ষেপগুলোর পাশাপাশি উপরোক্ত দাবিটি দ্রুত বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশের আর্থিক খাতকে স্বৈরাচারমুক্ত ও সুসংহত করতে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি বলেও স্মারকলিপিতে জানানো হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী এসএম এহসান উল্লাহ (ধ্রুব) কালবেলাকে বলেন, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রধান যারা সাবেক স্বৈরাচার সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল তাদের অপসারণ করা হলেও প্রশাসনের টপ সেকেন্ড-থার্ড লেয়ারে বহুসংখ্যক দুর্নীতিবাজ ও সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের চিহ্নিত দোসররা থেকে গিয়েছে। এ বিপুলসংখ্যক দুর্নীতিবাজ ও সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের চিহ্নিত দোসরদের অপসারণে বেশ কিছু সময়ের প্রয়োজন হলেও দেশের অর্থনীতির এই নাজুক সময়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের মতো অর্থ বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার উচ্চপর্যায়ে কোনোভাবেই দুর্নীতিবাজ ও সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের চিহ্নিত দোসরদের বহাল থাকা কাম্য নয়।
তিনি বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বরের শহীদি মার্চের ৫ দফার তৃতীয় দফা অর্থাৎ ‘প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ ও সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে’-এর প্রেক্ষিতে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ আওয়ামী দোসর তারেকুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রমাণাদিসহ আমরা অর্থ উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। যিনি এখনো স্বপদে বহাল থেকে দুর্নীতি এবং সাবেক স্বৈরাচার সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিভিন্ন কার্যক্রম করে যাচ্ছে। অর্থ উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন দ্রুত এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
মন্তব্য করুন