অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের তালিকা এ মাসেই প্রকাশ করা হবে।
শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে গণভবন পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা জানান।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, কেবিনেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে। ৩৬ জুলাই অথবা ৫ আগস্ট জনগণ এটি জয় করেছে। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের ভেতর দিয়ে আমরা এই ৫ আগস্টের মুহূর্ত পেয়েছি, ফলে সেটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং জনগণের বিজয়কে ধারণ করে রাখার উদ্দেশ্যে এই গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে।
গণভবনটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘরে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কারণ স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রনায়কের আসলে কী পরিণত হয় এবং জনগণই যে সব ক্ষমতার মালিক এ বিষয়টি পৃথিবীতে নিদর্শন করে রাখার জন্যই এটি জাদুঘর বানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, সেই উদ্দেশ্যে আজকে আমাদের প্রাথমিক পরিদর্শন ছিল। গণপূর্ত ও স্থাপত্য বিভাগের যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন, তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক পরামর্শ নিয়েছি, আমাদের আকাঙ্ক্ষাগুলো বলেছি-আমরা কীভাবে দেখতে চাই। পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক কমিটি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হয়তো আগামীকালের মধ্যেই কমিটি হয়ে যাবে। কমিটি হলে আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা কাজ শুরু করব, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা এটি উদ্বোধন করতে পারি।
জাদুঘরে ৩৬ দিনের অভ্যুত্থানের সামগ্রিক স্মৃতি ও দিনলিপি, আন্দোলনে শহীদদের তালিকা ও স্মৃতি এবং গত ১৬ বছরের নিপীড়ন-গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যার চিত্র তুলে ধরা হবে বলেও এ সময় জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, যে স্থাপত্য ভগ্নাবশেষ অবস্থায় আছে, সেটিকে সে অবস্থায় রেখেই জাদুঘর করা হবে। এখানে কিছু ডিজিটাল রিপ্রেজেন্টেশনও থাকবে। গত ১৬ বছরের একটি চিত্র আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, ‘এখানে প্রচুর দেয়াল লিখন আছে, গ্রাফিতি আছে। ছাত্র-জনতা যারা সেদিন এসেছিলেন, তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আসবাবপত্র যেগুলো লুট হয়েছিল, মানুষ আবার রেখে গেছে। সেগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। ভবনের চারিদিকে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ রয়েছে। আমরা চেষ্টা করব সেই ক্ষোভ সংরক্ষণ করেই জাদুঘর করার।
পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কোথায় হবে সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে নাহিদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা হবে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যমুনাতেই থাকবেন।
শহীদদের তালিকা প্রায় শেষের দিকে জানিয়ে নাহিদ বলেন, শহীদ পরিবার নিয়ে আমরা এ মাসে একটি স্মরণ সভা করব। ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম চলছে, সেটির ঘোষণা হবে। আহত ও শহীদ পরিবারের প্রতি আমাদের আর্থিক ও অন্যান্য যে প্রতিশ্রুতি আছে, সেখান থেকে দেওয়া হবে এবং তালিকাটিও আমরা সেখান থেকে ঘোষণা করব। সেটিও এ মাসেই হবে।
এ সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন