ফেনীতে বন্যার্তদের জন্য কমিউনিটি রান্নাঘর চালু করে ২৩ হাজার গরম খাবার দিয়েছে কোস্ট ফাউন্ডেশন। পানির নিচে জনপদ তলিয়ে গেলে রান্না করা সম্ভব নয়। কোস্ট ফাউন্ডেশন ফেনীর বন্যাকবলিত মানুষদের ৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না ও গরম খাবার সরবরাহ করার জন্য কমিউনিটি রান্নাঘর চালু করেছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে দাগনভূঁইয়া উপজেলার আব্দুল করিম উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৪০০ মানুষ কোস্ট ফাউন্ডেশন থেকে অতি কাঙ্ক্ষিত গরম খাবার গ্রহণ করেন।
আশ্রয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষ কোস্টের একটি দল স্থানীয় রান্নাঘরের কর্মীদের সাথে মিলে বন্যার্তদের মাঝে খাবার বিতরণ করে। আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা কমিটিও তাদের এ কাজে সমর্থন করে।
স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশের অর্থায়নে কোস্ট আটটি আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ১,৪০০ জনকে রান্না করা খাবার বিতরণ করছে। গত সাত দিনে তারা এ পর্যন্ত তেইশ হাজার খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে।
কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী কোস্ট ফাউন্ডেশনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ কমিউনিটি রান্নাঘর ও খাবার বিতরণ পর্যবেক্ষণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে দলটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বন্যা দুর্গতদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রথমে তারা বিতরণকৃত খাবার, রুটি, দুধ এবং অন্যান্য সামগ্রীর গুণমান পরীক্ষা করেন। এরপর একটি মনোনীত দল শিশুসহ ৪০০ জনকে খাবার বিতরণ করে।
কোস্টের নির্বাহী পরিচালক বলেন, দলের জন্য এটি সত্যিই একটি অনুপ্রেরণাদায়ক সন্ধ্যা ছিল। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই সহায়তা একটি অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হওয়া বন্যা-দুর্গত মানুষের অধিকার। এটা কারো দান বা উদারতা নয়।
ফেনী জেলায় স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই জেলায় বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও প্রধান সরবরাহ সড়ক দ্রুত গতিতে পুনঃস্থাপন করেছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় ফেনী শহরে এক মিনিটেরও লোডশেডিং হয়নি। কোস্ট ফাউন্ডেশন প্রথম তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে বিভিন্ন এলাকায় দুর্গতদের জন্য কমিউনিটি রান্নাঘরের মাধ্যমে গরম খাবার কর্মসূচি শুরু করে।
এরপর তাদের এ সাড়াপ্রদান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশ।
বন্যা বিপর্যয়ের প্রথম থেকেই, কোস্টের মাঠকর্মীরা ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলায় জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও, কোস্ট আশ্রয় কেন্দ্রগুলিতে শুকনো খাবারের প্যাকেজ ও খাবার পানি বিতরণ করে।
বন্যার সময়, কোস্ট নোয়াখালীর চারটি স্থানীয় এনজিও সিডব্লিউডিএ, ওপিসিএ, প্রান্তিক এবং প্রাণকে বিভন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার এবং বোতলজাত পানি এবং স্যালাইন দিয়ে জরুরী ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত করতে সহায়তা করে।
কোস্ট প্রাথমিকভাবে ত্রাণ কাজের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে আট লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে এবং প্রয়োজনে আরও সহায়তা করার পরিকল্পনা করেছে। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য বৃহৎ পরিসরে সহায়তার জন্য কোস্ট কিছু দাতা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করছে। ইতিমধ্যে এ আবেদনে সাড়া দিয়ে আর্থিক সহায়তা নিয়ে যুক্ত হয়েছে।
কোস্টের নির্বাহী পরিচালক এম রেজাউল করিম চৌধুরী কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ঢাকা থেকে সবকিছু সমন্বয় করছেন। এছাড়া সঙ্কট কবলিত মানুষদের সাড়া দিতে মাঠের দলকে সহযোগিতা করছেন কয়েকজন উর্ধতন কর্মী।
কোস্ট ফাউন্ডেশন ফেনী, নোয়াখালী এবং লক্ষ্মীপুরে তাদের মূল কর্মসূচি নিয়ে পনের বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে।
মন্তব্য করুন