জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবার দায়িত্বশীল ও শিষ্টাচারপূর্ণ আচরণ করা উচিত।
সম্প্রতি ইসলামের নবীজী (সা.)-কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটূক্তি করে স্ট্যাটাস দেওয়ার একটি অভিযোগ প্রচার করে গণউত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার মাধ্যমে এক কিশোর গণপিটুনির শিকার হওয়ার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে।
যার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক বক্তব্যে এ কথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন ও অভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে দেশ ক্রমে স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক বিভিন্ন অপপ্রচারের ঘটনা দৃশ্যমান হচ্ছে। যা জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য হুমকিস্বরূপ। জনমনে উদ্বেগ, বিদ্বেষ ও বিভ্রান্তি তৈরি করছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের অপপ্রচার কখনো কখনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দেয়। মানবাধিকারের লঙ্ঘন ঘটায়। পাশাপাশি, বিভ্রান্তিকর তথ্যকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও গণপিটুনির মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
জনস্বার্থে এবং শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সমাজে উত্তেজনা সৃষ্টি করা এবং কখনো কখনো ধর্মকে উপজীব্য করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা সাম্প্রতিককালে সমাজে শঙ্কা ও ভীতি সৃষ্টির কারণে পরিণত হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রায়শই অঘটন ঘটছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা ও তাদের উপস্থিতিতে একজন যুবককে পিটিয়ে আহত করার মত ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে যা আইনের বরখেলাপ এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন আমাদের সকলকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, কেউ অপরাধ করে থাকলে তার বিচারের জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া রয়েছে। যাচাই বাছাই ছাড়া কেবল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার কারণে সামাজিক যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে তা দুর্ভাগ্যজনক।
উল্লেখ্য, ইসলামের নবীজী (সা.)-কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটূক্তি করে স্ট্যাটাস দেওয়ার একটি অভিযোগ প্রচার করে গণউত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার মাধ্যমে এক কিশোর গণপিটুনির শিকার হওয়ার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
এ অবস্থায়, ওই ঘটনাটি নিবিড় তদন্তপূর্বক প্রকৃত অবস্থা সুস্পষ্ট করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি ছিলো কিনা তা যাচাইপূর্বক ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে আগামী ০৮ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-কে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন