ছাত্র-জনতার সম্মিলিত ত্যাগের ফলে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সবসময় অনমনীয় থাকবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। রোববার (৩১ আগস্ট) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার জন্য চীনের প্রশংসা করেন। উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে অনেক জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অ্যাক্টের ৩৪(ক) ধারা বাদ দিয়ে গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা, ভবিষ্যতে বিভিন্ন কাজের দরপত্র উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে আহ্বান করা এবং এক্ষেত্রে কারও সঙ্গে কোনো বিশেষ চুক্তি বা সুবিধা প্রদান না করা অন্যতম বলে উল্লেখ করেন তিনি। বর্তমানে দেশের গ্যাস সংকট উত্তরণে ল্যান্ড বেজড গ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণ, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম তৈরি ও ট্রেনের লোকোমোটিভ ক্রয়ে চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা কামনা করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন সরকার বাংলাদেশ ও এই দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সব সময় সহযোগিতা করে যাবে। এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার পাশাপাশি চীনা রাষ্ট্রদূত বিগত আমলে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে বলেন, চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। চীন সরকার সব সময় বাংলাদেশের জনগণের উন্নয়ন হয় এরকম প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
এ সময় তিনি বর্তমানে চলমান চীনা প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করতে এ সরকারের সহযোগিতা চান। উপদেষ্টা চীনের চলমান প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে সব প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, সরকার খরচ কম করে কাজের গুণগত মান বজায় রেখে গ্রাহক সেবার উপর জোর দিচ্ছে। এছাড়াও উপদেষ্টা সড়ক, সেতু, রেল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন প্রকল্পগুলোতে চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা কামনা করেন।
এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত গ্রিন এনার্জি খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে বলেন এবং অন্য খাতগুলোতে অগ্রাধিকারমূলক ভিত্তিতে যাচাই করে সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার ব্যাপারে উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেন।
বৈঠকে চীন দূতাবাসের কাউন্সিলার সং ইয়াং, ২য় ও তৃতীয় সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন