নোয়াখালী, ফেনীসহ দেশের পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন প্রখ্যাত ইসলামী স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ। বন্যার্তদের জন্য তিনি শত শত টন ত্রাণ সহায়তা মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিয়েছেন।
বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তায় অনুদান সংগ্রহ নিয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, নিজেরাই যারা ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল, সেই রোহিঙ্গা ভাইবোনেরা নিজেদের ত্রাণ থেকে একটু একটু করে পয়সা বাঁচিয়ে আমাদের বন্যা তহবিলে ডোনেশন করেছেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া এই মানুষগুলো আমাদের দুঃসময়ে নির্বিকার থাকতে পারেননি। ক্যাম্প থেকে ১১ লাখ ১৯ হাজার ৩৫০ টাকার বিরাট তহবিল সংগ্রহ করেছেন। এরপর বাংলাদেশি প্রতিনিধির মাধ্যমে তা পাঠিয়েছেন আমাদের অফিসে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, তাদের এই মহৎ উদ্যোগ প্রমাণ করে—মুসলিম ভ্রাতৃত্বের সামনে ঘুচে যায় দেশকাল, মানচিত্র কিংবা কাঁটাতারের ভেদাভেদ।
এর আগে বন্যার্তদের ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে একটি পোস্টে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি বলেন, অভূতপূর্ব ঘটনাবহুল এক দিন পার হলো আজ। স্বেচ্ছাশ্রম দেওয়ার জন্যও যে মানুষ এইভাবে প্রতিযোগিতা করতে পারে, আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।
তিনি লিখেন, আমাদের কর্মযজ্ঞে কায়িক শ্রম দিতে ছুটে এসেছিলেন হাজারো মানুষ। তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পা হারানো প্রতিবন্ধী, সনাতন ধর্মাবলম্বী, এমনকি শিশুরাও। আমরা সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার পরিবারের জন্য শুকনো খাবারের প্যাকেজের কিছু অংশের কাজ আজ শেষ হয়েছে। এই কাজ শেষ হতে আরও দুদিন লাগবে। এ ছাড়া ৪০ হাজার পরিবারের জন্য ভারি খাবারের পরিকল্পনা থাকলেও সেটা বৃদ্ধি করে ৫০ হাজার করা হয়েছে। ভারি খাবারের কিছু অংশের কাজও সম্পন্ন হয়েছে আজ।
আহমাদুল্লাহ জানান, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ৪ হাজার পরিবারের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা থাকলেও সেটাকে বাড়িয়ে ৫ হাজার করা হয়েছে। ঘর হারানো ৫ হাজার পরিবারকে টিন ও নগদ অর্থ সহায়তা করা হবে ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই জাতীয় দুর্যোগ থেকে আত্মরক্ষার তাওফিক দিন।
কেবল বন্যার্ত নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের জন্যও উদ্যোগ নিয়েছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এমন অনেকে নিহত হয়েছেন, যারা ছিলেন পরিবারের একমাত্র অথবা অন্যতম উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পরিবারের সদস্যরা। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এরকম পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনকল্পে এককালীন আর্থিক সহায়তা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
মন্তব্য করুন