কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় শত শত বন্যার্তদের উদ্ধার করে সকলের সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. বায়েজিদ বোস্তামী। গত ৮ দিনে তিনি অসহায় বন্যার্তদের উদ্ধারে ছুটে বেড়িয়েছেন বুড়িচংয়ের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত। নিজ হাতে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, অন্তঃসত্ত্বা নারী, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিসহ ৩৫০ এর বেশি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছেন।
সেনাবাহিনীর নবীন এই কর্মকর্তার উদ্ধার তৎপরতায় মুগ্ধ স্থানীয়রা। যেখানে লোকজন আটকে থাকার খবর পেয়েছেন ছুটে গেছেন বায়োজিদ। বোট নিয়ে ছুটাছুটির পাশাপাশি হাঁটু পানি থেকে শুরু করে গলা পানিতে নেমে উদ্ধার কাজ করে চলেছেন তিনি।
নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার সন্তান লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ ২০২০ সালে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৮৬ তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের শেষে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ চলাকালীন ২০২২ সালে তার বাবা মো. কামাল হোসেন (পরিদর্শক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, আটপাড়া) পরলোক গমন করেন। বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে দেশের সেবা করবে, দেশের সেবা নিজেকে নিয়োজিত করবে। পরলোক গমনকারী বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ সেনাবাহিনীর কঠোর প্রশিক্ষণ সফলতার সাথে সমাপ্ত করেন। বাল্যকাল থেকেই দক্ষ সাঁতারু লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ প্রশিক্ষণ চলাকালীন নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সাঁতারের উচ্চতর প্রশিক্ষণ ‘ফ্রগম্যান কোর্স’ সম্পন্ন করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত এই অফিসার গত ২০ জুন কুমিল্লা সেনানিবাসে অবস্থিত একটি পদাতিক ব্যাটালিয়নে যোগদান করেন। এরপর তিনি বুড়িচং উপজেলায় বন্যার্তদের উদ্ধারকার্যে নিয়োজিত হন। এ সময় তার ইউনিট অধিনায়ক তাকে সাঁতারের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশের প্রয়োজনে এগিয়ে আসার নির্দেশ প্রদান করেন। বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও ইউনিট অধিনায়কের নির্দেশে দেশপ্রেমিক তরুণ লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ বন্যায় আটকে পড়া মানুষের উদ্ধারে জীবনবাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
তরুণ লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ এর মতোই দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রত্যেক সদস্য কাজ করে যাচ্ছে বন্যার্তদের সেবায়। তারুণ্যের এই সহমর্মিতা ও মানবতাবোধ হোক ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রেরণার উৎস।