মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজি, হয়রানি, নির্যাতন ও বিভিন্ন সেতুতে টোল আদায় বন্ধ নিয়ে নতুন বার্তা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ বার্তা দেন।
সারজিস বলেন, দুটি জরুরি বিষয় নিয়ে আমাদের কথা বলার আছে। একটি হলো বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ১৫টি সেতুতে ছাত্রদের কথা বলে টোল আদায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা হলো এটি রাষ্ট্রের আয়ের উৎস। ফলে কেউ স্টুডেন্টদের কথা বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম অপব্যবহার করে এ কাজ করবেন না। প্রতিটি ব্রিজে টোল দিতে হবে।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোনো ত্রাণের ট্রাক কোথাও গেলেও টোল দিতে হবে। কেননা দেশকে স্থিতিশীল করতে হলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল করতে হবে। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করার যে নোংরা সংস্কৃতি ছিল এত বছর ধরে, এখন আপনি যদি সামান্য কিছু অস্থিতিশীল অবস্থা দেখে সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করেন কিংবা কোনো সেতুতে টোল দেওয়া বন্ধ করে দেন বা স্টিকার দেখিয়ে পার হয়ে যান এটিকে আমরা কোনোদিনও সমর্থন করি না। সারজিস বলেন, আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট বার্তা হলো এসব সেতুর টোল দিয়ে যেতে হবে। কেননা ত্রাণের কথা বলে কোনো একটি গাড়ি পার হয়ে গেলে তার সঙ্গে আরও অনেক গাড়ি পার হয়ে যাচ্ছে। এভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার বা নোংরা সংস্কৃতিকে আমরা কোনোভাবে সমর্থন করি না। রাষ্ট্র সুন্দরভাবে চলার জন্য রাষ্ট্রের আয়ের উৎসগুলো সুন্দরভাবে চলতে হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আওয়ামী লীগ ক্ষমতার অপব্যবহার করে হয়েছে। তাদের দল বাদে অন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর নামে মিথা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, এলাকাছাড়া করেছে। এটিকে আমরা কোনোভাবে সমর্থন করি না। কিন্তু আজকে ১৬ বছর পর ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন হয়েছে। আজকের এই গণঅভ্যুত্থানের পর একটি দল বা দলের নেতাকর্মীরা একই কাজ করেন তাহলে তাদের থেকে কি শিক্ষা নিলেন? আমরা নির্যাতকের পরিবর্তন চাই না, নির্যাতনের সিস্টেমের পরিবর্তন চাই।
তিনি বলেন, আমাদের স্পষ্ট বার্তা হলো আপনাদের চোখে সামনে অনেকগুলো জলন্ত উদাহরণ রয়েছে। সেগুলো থেকে শিক্ষা নিন। না হলে জনগণ আপনাদের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে। আমরা এটা দেখতে চাই না যে আবার কাউকে মিথা মামলা বা হয়রানির সেই সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজি, হয়রানি, নির্যাতন এসব আমরা সমর্থন করি না। এই কলুষিত সিস্টেমের বিরুদ্ধেই ছিল ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান। নতুন বাংলাদেশে এসবের পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না। তাহলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাথে আপনাদের কোনো পার্থক্য থাকে না।
আন্দোলনের এ সমন্বয়ক বলেন, তাছাড়া সড়কের প্রত্যেক সেতুতে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী টোল দিতে হবে ৷ রাষ্ট্রকাঠামো পরিচালনায় ক্ষমতার অপব্যবহার কখনোই গ্রহনযোগ্য নয় ৷
মন্তব্য করুন