কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৩, ০৬:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জুলাইয়ে হামলা-মামলার শিকার ৪৮ সাংবাদিক

ছবি : বিএফইউজের লোগো
ছবি : বিএফইউজের লোগো

সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই ছিল একটি উত্তাল মাস। এই মাসের গত ৩০ দিনে সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশের জেরে হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ৪৮ জন সাংবাদিক।

সোমবার (৩১ জুলাই) এক বিবৃতিতে এই তথ্য দিয়েছে পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের মনিটরিং কমিটি।

বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকনের নেতৃত্বে এই মনিটরিং কমিটিতে কাজ করছেন সহসভাপতি রাশিদুল ইসলাম, সহকারী মহাসচিব শহীদুল্লাহ মিয়াজী, প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান ও দপ্তর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন।

বিবৃতিতে জানানো হয়, চলতি জুলাই মাসের ১-৩০ তারিখ পর্যন্ত দেশের প্রথম সারির সংবাদপত্র ও শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংবাদ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলা, নির্যাতন ও বাধার মুখে পড়েছেন ৩৫ জন সাংবাদিক এবং মামলার আসামি করা হয়েছে ১৩ জন সাংবাদিককে। মামলায় আসামি হওয়া ১৩ সাংবাদিকের মধ্যে ৯ জনকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আসামি করা হয়েছে।

ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি গত ২৮ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির সংবাদ সংগ্রহকালে এবং ১৮ জুলাই ফেনীতে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও লাকসাম, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৮ জুলাই সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মারধরের শিকার হন সাংবাদিক আবদুস সালাম। তিনি স্থানীয় আমাদের বড়াল পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার।

আরও পড়ুন : সাংবাদিকদের ওপর হামলা-মামলা স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছে: টিআইবি

১৪ জুলাই নোয়াখালীতে বিএনপির সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহে যাওয়ার সময় লাকসামে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার হন ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বাবুল তালুকদার।

১৮ জুলাই গাবতলী থেকে বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচির সংবাদ সংগ্রহে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে সংঘর্ষে আহত হন যমুনা টিভির সাংবাদিক শরীফুল ইসলামসহ কয়েকজন। একই দিন ফেনীতে বিএনপির পদযাত্রার সংবাদ সংগ্রহকালে আওয়ামী লীগের হামলা এবং ফেনী প্রেস ক্লাবে আক্রমণের সময় স্থানীয় ১১ জন সাংবাদিক হেনন্তার শিকার হয়েছেন। হেনস্তা ও হুমকির শিকার সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এন এন জীবন, মানবজমিন প্রতিনিধি নাজমুল হক শামিম, মোহনা টিভি প্রতিনিধি তোফায়েল আহমেদ নিলয়, বাংলাভিশনের ক্যামেরা জার্নালিস্ট মিরাজুল ইসলাম মামুন, সময় টিভির ক্যামেরা জার্নালিস্ট মীর হোসাইন রাসেল, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রতিনিধি দুলাল তালুকদার ও ফেনীর তালাশের রিপোর্টার এমএ আকাশ।

২৪ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নিজ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন দৈনিক আমাদের কণ্ঠের ক্রাইম রিপোর্টার ও ডিইউজের নির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ।

২৪ জুলাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হামলায় আহত হন এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধি, চৌদ্দগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চৌদ্দগ্রাম টেলিভিশন সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন নয়ন। উপজেলা পরিষদের কাছে দোয়েল চত্বরে দিন-দুপুরে তার ওপর হামলা করে অজ্ঞান হয়ে পড়ার পর সন্ত্রাসীরা বীরদর্পে চলে যায়। আগের দিন ২৩ জুলাই স্থানীয় ভোরের কলাম পত্রিকার প্রতিনিধি আতাউর রহমান রিপনের ওপরও সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। সংবাদ প্রকাশের জেরে এ দুটি হামলা হয় বলে জানা গেছে।

২৭ জুলাই সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণে হামলায় রক্তাক্ত হন স্থানীয় দৈনিক শুভ প্রতিদিনের সহকারী সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাজ উদ্দিন। তিনি দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত টিভি ও সিএসবি টেলিভিশনের সাবেক সিলেট প্রতিনিধি এবং সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য।

২৮ জুলাই ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত শেয়ারবিজের বীর সাহাবীর মোবাইল কেড়ে নেন এবং হেনস্তা করেন পুলিশের এসি আবদুল্লাহ আল মামুন। একই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় হামলার শিকার হন দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল। আখাউড়ার রাধানগরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ক্লিনিক থেকে একটি মেয়েকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাতে বাধা দিলে সাংবাদিক বিশ্বজিৎকে মারধর করা হয় বলে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যায়।

২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশপথে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির সংবাদ সংগ্রহকালে অন্তত নয়জন সাংবাদিক শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। আহতরা হলেন যমুনা টেলিভিশনের শরীফুল ইসলাম, নিউজ টোয়েন্টিফোরের আরেফিন শাকিল ও আজনবী, যুগান্তরের তরিকুল ইসলাম, চ্যানেল আইয়ের আক্তার হোসেন ও মনির, মানবজমিনের নূরে আলম জিকু ও কিরণ শেখ এবং রেডিও ধ্বনির শাহাবুদ্দিন চৌধুরী। এ ছাড়া মাতুয়াইল এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি ও বাধার মুখে পড়েন বাংলাভিশনের সেকান্দার রেমান ও কেফায়েত শাকিল, মাইটিভির ইউসূফ আলী, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার জয়নাল আবদীন শিশির, এখন টিভির শাহরিয়ার জামান এবং বিদেশি গণমাধ্যম রাপ্টলির প্রতিনিধি হোসাইন তারেক প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিছিলে বিএনপি নেতার গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রৌমারীতে ব্যবসায়ীদের আহ্বায়ক কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত

৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ায় মামুনের বিরুদ্ধে যুবদলের মামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ক্ষমা পেয়ে আমিরাত থেকে ১২ জন ফিরছেন চট্টগ্রামে

‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার দুই ভাবে পরাজিত’

মহানবীকে (সা.) কটূক্তিকারী সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

শিবচর আঞ্চলিক সড়কে গ্রামবাসীর বৃক্ষরোপণ

মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা, ৭ দিন পর ফাঁস

১২ দিনেও মেলেনি রানীনগরে নিখোঁজ নার্গিসের সন্ধান

১০

দায়িত্বশীলদের নিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্র শিবিরের সমাবেশ

১১

আযহারী শিক্ষার্থীরা হবে বাংলাদেশ ও মিশরীয় ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন : মিশরীয় রাষ্ট্রদূত

১২

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৩

আন্দোলনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ কর্মীকে গণধোলাই

১৪

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক সমাবেশ

১৫

কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

১৬

পাকিস্তানের জলসীমায় বিপুল তেল-গ্যাস মজুতের সন্ধান

১৭

বিসিবির দুর্নীতির তদন্ত দাবি সাবেকদের

১৮

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

১৯

জেল খেটেছি তবু শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যাইনি : সাবেক এমপি হাবিব

২০
X