মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের খোলা চিঠি

ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের খোলা চিঠি। ছবি : সংগৃহীত
ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের খোলা চিঠি। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি দিয়েছেন ডিপ্লোমা কৃষিবিদ/ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। সোমবার (২৬ আগস্ট) তারা অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি দেন।

চিঠির শুরুতে তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুস, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যগণ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদকে দ্বিতীয় স্বাধীন বাংলাদেশের হাল ধরার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন এবং কৃতজ্ঞতা জানান। এরপর তারা বাংলাদেশে শোষণ এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তাদের এই আত্মত্যাগ বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

খোলা চিঠিতে কৃষিবিদরা বলেন, বিগত দিনগুলোতে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ বিভিন্নভাবে, বিশেষ একটি গোষ্ঠী দ্বারা শোষণ এবং বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। ঠিক তেমনিভাবে আমরা ডিপ্লোমা কৃষিবিদ/উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারাও শত বৈষম্যের শিকার হয়েছি। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমরা ডিপ্লোমা কৃষিবিদরা দেশের খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকি। দেশের কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়নে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে কৃষকের বন্ধু হিসেবে কাজ করে থাকি।

সারা বাংলাদেশে প্রতিটি ইউনিয়নে তিনজন করে ডিপ্লোমা কৃষিবিদ / উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছে। যারা কৃষকের সকল সমস্যার সমাধানে কাজ করে থাকেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সকল প্রকল্প বাস্তবায়নে এই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ভূমিকা অপরিসীম। মাঠ পর্যায়ে কৃষির উন্নয়নে সরকারের সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

অথচ এই ডিপ্লোমা কৃষিবিদ /উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের বৈষম্যের অন্ত নেই। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ আমাদের কাজে লাগিয়ে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যায়। মাঠে কাজ করে ডিপ্লোমা কৃষিবিদ / উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ অথচ বাহবা নেয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কিন্তু এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পর্যন্ত করতে পারিনি। সবচেয়ে কষ্ট লাগার বিষয় হলো আমাদের কোনো পদোন্নতি নেই, একজন পিওনের ও পদোন্নতি আছে অথচ আমাদের জন্ম যেখানে মৃত্যু সেখানে। অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন যাবত আমাদের পদোন্নতি আটকে রাখা হয়েছে। এ রকম শত শত ন্যায়সংগত সুযোগ সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত।

আপনাদের প্রতিশ্রুতি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, আর ন্যায়ের পক্ষে মুক্তভাবে কথা বলার স্বাধীনতা। তাই আজ আপনাদের প্রতিশ্রুতিতে সাহসী হয়ে আমাদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে মন খুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা ডিপ্লোমা কৃষিবিদ/ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ আর বৈষম্যের মধ্যে থাকতে চাই না। তাই বৈষম্য নিরসনে আমাদের কিছু দাবি আপনাদের পদক্ষেপের জন্য উপস্থাপন করছি।

১।উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের গেজেটেড কর্মকর্তা ২য় শ্রেণি হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

২। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ৯ম গ্রেডে ৪০% পদোন্নতি প্রদান করতে হবে।

৩। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তৃতীয় গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪। চাকুরীবিধী অনুযায়ী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নিজ জেলায় বাহিরে বদলির অন্যায় এবং অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

৫। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে প্রশাসন ক্যাডার নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

৬। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সকল প্রকল্পে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দের প্রতিনিধি রাখতে হবে।

৭। প্রকল্প তৈরির সময় এসএএওদের প্রতিনিধি এবং প্রতিটি বিভাগীয় মিটিংয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সদস্য রাখতে হবে।

৮। সকল কৃষি অফিসের প্রকল্পের ব্যায়সংক্রান্ত স্বচ্ছতার জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক থাকতে হবে।

৯। খামারবাড়ি, এডি অফিস, ডিডি অফিসে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পদ সৃষ্টি করতে হবে।

১০। যত দ্রুত সম্ভব, নিয়োগ বিধিমালা পরিবর্তন এবং গ্রেডেশন তালিকা হালনাগাদ করতে হবে।

১১। ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ প্রদান করতে হবে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য ভর্তির সুযোগ দিতে হবে। ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।

১২।ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে। কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত করা এবং আলাদা শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

১৩।প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের স্বতন্ত্র অফিসসহ বাসভবনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৪। নির্ধারিত ভ্রমণ বিল ৫০০০ টাকা প্রদান করতে হবে।

১৫। টাইমস্কেল ও সিলেকশন/উচ্চতর গ্রেড বহাল করতে হবে চাকুরীকাল গণনা করে, আগের মত ৮,১২, ১৬ বছরে করতে হবে।

১৬। ৩/৪ বছরের জটিলতা নিরসন করতে হবে।

১৭। ব্লকের কাজ ত্বরান্বিত করতে সরকারিভাবে মোটরসাইকেল ও স্মার্টফোন+মাসিক ডাটার ব্যবস্থা করতে হবে।

১৮। সর্বস্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

১৯। হয়রানি/প্রতিহিংসামূলক বদলি বন্ধ করতে হবে।

২০। নিয়োগ পাওয়ার পর ৬ মাসের বাধ্যতামূলক ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে : আবু হানিফ

ক্রীড়াবিদ শওকত আলীর স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল

শাহরিয়ার কবির আটক

সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

রাসূল (স.) আদর্শ ধারণ করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে

ঝিনাইদহে নাশকতা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনের গ্রেপ্তারের খবরে বিএনপির আনন্দ মিছিল

মানিকগঞ্জে ধলেশ্বরী নদী থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার

ভূমি উপদেষ্টার পরিদর্শন, হয়রানি ছাড়া নামজারি খতিয়ান পেয়ে উৎফুল্ল নাজিম  

চট্টগ্রামে জশনে জুলুশে মানুষের ঢল  

১০

বন্যা পরবর্তী প্রাণী চিকিৎসায় বাকৃবি শিক্ষার্থীরা

১১

‘দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তির জন্য রাসুল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে’

১২

নার্সের ভুলে ৩ দিনের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

১৩

‘স্মরণকালের সবচেয়ে বড় গণসমাবেশ’ করার প্রস্তুতি বিএনপির

১৪

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত

১৫

রাত ১টার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস

১৬

সিরাজগঞ্জে কবরস্থানে মিলল অস্ত্র ও গুলি

১৭

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে জামায়াতের নায়েবে আমিরের মতবিনিময়

১৮

২৮ থেকে ৪২তম বিসিএসের বঞ্চিত সেই ক্যাডাররা ফের বঞ্চনার শিকার

১৯

তিন বিভাগে ভারি বৃষ্টির আভাস

২০
X