দাবি মেনে নেওয়ার পরও শিক্ষার্থী ও সবিচালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করেছেন সচিবালয় অবরুদ্ধ করে রাখা আনসার সদস্যরা। এ সময় তারা সচিবালয়ের ভেতরে থাকা গাড়িও ভাঙচুর করেন।
রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে সচিবালয়ে এসব ঘটনা ঘটে।
এর আগে আনসারের বিভিন্ন দাবি মেনে নেওয়ার পরও বাহিনীটির একটি দল সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের আটকে রেখেছেন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করেছেন বলে ভিডিও বার্তায় অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সচিবালয়ের সামনে যাওয়ার আহ্বান জানান। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেই তাদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন আনসার সদস্যরা। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে লাঠিপেটা করে আনসার সদস্যরা। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে।
পরে শিক্ষার্থীরা আবারও জড়ো হয়ে আনসার সদস্যদের ধাওয়া করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন আনসাররা। গুলি, লাঠিপেটা ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় থেকে ছাত্ররা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে এলে আনসার সদস্যরা তাদের ওপর ইট-পাটকেল মারতে থাকে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আনসার সদস্যরা গুলিও করেন। শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ার গ্যাস মারারও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। আনসার সদস্যদের গুলি, ইটপাটকেলের আঘাতে অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে যায়। তারপর তারা আনসার সদস্যদের ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে আনসার সদস্যরা সচিবালয়ের সামনে থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর শাহবাগ ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে গত দুদিন ধরে আন্দোলনে রয়েছেন আনসার সদস্যরা। গতকাল রবিবার বন্যার্ত মানুষের জন্য ত্রাণবহনকারী কয়েকটি ট্রাকও আটকে দেন তারা। একপর্যায়ে তাদের একাংশ বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঢুকে সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
পরে বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাদের ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিল করে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। তবুও আনসাররা চাকরি জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে অনড় থাকেন এবং সচিবালয়ের ভেতরে কয়েকজন উপদেষ্টা ও সচিবসহ বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আটকে রাখেন।
পরে এ খবর পেয়েই শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের দিকে রওনা হন।
মন্তব্য করুন