নামের মিলের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করছে বর্তমানে বাতিলকৃত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনসহ ভুয়া ও নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নানা প্রতারণা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সতর্ক ও সোচ্চার থাকতে মানবাধিকার কর্মী, সংস্থা ও গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলকে আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
রোববার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, মহাসচিব সাইফুল ইসলাম দিলদারের বিরুদ্ধে মানবপাচার, ভাইবোনের সম্পত্তি আত্মসাৎ, কমিটি বাণিজ্য ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে ওই সংস্থার নিবন্ধন বাতিল হয়। মানবপাচার মামলায় কথিত সাইফুল ইসলাম দিলদার বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কথিত সংগঠনটির কতিপয় বিপথগামী ব্যক্তি ২০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে তাদের হীনউদ্দেশ্য চরিতার্থে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নামে ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগ করে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও আত্মত্যাগের ফলপ্রসূতায় প্রতিষ্ঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যেখানে দেশে স্থিতিশীলতা আনয়ন ও বঞ্চিতদের যৌক্তিক দাবি পূরণে প্রচেষ্টা নিচ্ছে সেই অবস্থানের সুযোগ নিয়ে প্রতারক দিলদারের দুষ্কর্মের কয়েকজন সহযোগী সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য অবাক করার মতো এসব অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। এ বিষয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছেও তারা নিজেদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে তুলে ধরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি পরিচয়ে বিদেশ ভ্রমণ করে। তদন্ত বা বিচার করার আইনগত এখতিয়ার না থাকায় দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতারণামূলক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে অর্থ আদায় করে। বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে দেশব্যাপী একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করে। তাদের গাড়িতে অ্যামব্লেম ও পতাকা, নেমপ্লেট ইত্যাদি ব্যবহার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ধোঁকা দিয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখার কারণে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছিল মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের দুটি রেজিস্ট্রেশন বাতিল, অপর একটি রেজিস্ট্রেশন বাতিলের জন্য কারণ দর্শানো হয়। পরে সেগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ৩টি রিট আবেদন করে যা গত ৭ মে ২০২৪ প্রত্যাহার করে নেন। কাজেই এই মুহূর্তে কথিত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই।