ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২৫ আগস্ট) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই সহায়তা চান তিনি। মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অফিস কক্ষে উপদেষ্টাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতিনিধি দলের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমাদের এই স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, সর্বস্তরের জনগণকে আমরা সঙ্গে পেয়েছি। এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রতি আমাদের কিছু প্রতিশ্রুতি তৈরি হয়েছে। সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রেখে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নাহিদ আরও বলেন, পুরো সময়টা জাতিসংঘ এবং হিউম্যান রাইটস সংগঠনগুলো আমাদের সঙ্গে ছিল। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। তাদের পূর্বেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলাম যে, বিগত সরকার চূড়ান্ত ‘ক্র্যাক ডাউন’-এর দিকে যাবে। পরে সে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা চাই জাতিসংঘের অধীনে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানুক আন্দোলনের এই সময়ে বাংলাদেশে কী কী ঘটেছে, আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার প্রতি কতটা নৃশংস ছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ।
রোরি মুঙ্গোভেন অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিশেষ করে তরুণরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন, তাতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অনুপ্রাণিত হয়েছেন। এ ঘটনাটিকে বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন তিনি। সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তারা সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও জানান রোরি মুঙ্গোভেন। প্রতিনিধি দলের অপর সদস্য আন্দোলনের সময় সংঘটিত ঘটনাগুলোর তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণ করার জন্য আইন, স্বরাষ্ট্র এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন, যাতে ভবিষ্যৎ তদন্তে এ প্রমাণগুলো কাজে লাগানো যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ওটিপি প্ল্যাটফর্মে আগের সরকারের মতো পর্যবেক্ষণের নামে নিয়ন্ত্রণ না করার অনুরোধ করে প্রয়োজনে এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রেরণ করারও অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের যুব সমাজের ক্রীড়ার প্রতি আগ্রহ রয়েছে। পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার ক্রীড়াঙ্গনে সর্বস্তরে দুর্নীতি করেছে। আমাদের সরকার ক্রীড়াঙ্গনকে দুর্নীতি ও রাজনীতি মুক্ত করার কাজ করছে। উভয় উপদেষ্টাই জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরের প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাতের জন্য ধন্যবাদ জানান।
মন্তব্য করুন