বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত-নিহত শ্রমজীবীদের ক্ষতিপূরণসহ ১০ দফা দাবিতে সমাবেশ ও শ্রম উপদেষ্টাকে স্মারক পেশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল ১১টায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শ্রমজীবীসহ আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কমিশন গঠন করে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, রেশনিং প্রথা চালু করে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ, শ্রমজীবী মানুষের কাজের নিশ্চয়তা প্রদানের দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশ শেষে মিছিল সচিবালয়ে সামনে গেলে পুলিশ কর্মকর্তারা প্রতিনিধিদল নিয়ে সচিবালয়ে যান। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সচিবালয়ে না থাকায় শ্রম সচিবের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন টিইউসিরসহ সভাপতি মাহাবুব আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, দপ্তর সম্পাদক সাহিদা পারভীন শিখা ও অর্থ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন।
আলোচনায় নেতারা শ্রমিকদের বিরাজমান সংকট, ন্যায্য মজুরি, রেশনিং ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা, শ্রমআইন ও অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব গুরুত্বের সহিত শ্রমিক নেতাদের কথা শুনেন এবং পেশকৃত ১০ দফা দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে শ্রমিক নেতাদের আশ্বাস প্রদান করেন।
এসময় বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়নের ১০ দফা দাবিতে উল্লেখ করেন- ১. অবিলম্বে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কমিশন গঠন করে জীবন-ধারন উপযোগী ‘জাতীয় ন্যূনতম মজুরি’ ঘোষনা করতে হবে। ২. আইএলও কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুসারে শ্রমআইন সংশোধন ও কার্যকর করতে হবে। ৩. রেশন প্রথা চালু করে চাল, ডাল, আটা, তেল ও শিশু খাদ্য দিতে হবে। ৪. নিহত, আহত ও স্থায়ী অক্ষম শ্রমিকদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ৫. প্রকৃত হত্যা ও হামলাকারীদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ৬. নিহত, আহত, ক্ষতিগ্রস্ত ও স্থায়ী অক্ষমদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসা, সহায়তা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। ৭. কোনো মালিক যাতে আন্দোলনের কারনে বন্ধকালীন সময়ের মজুরি কর্তন না করেন সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা করে সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের পূর্ণ মজুরি প্রদান করতে হবে। ৮. প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক নির্বিশেষে সকল শ্রমিক কর্মচারীদের চাকরি ও কাজের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে। আউট সোসিং প্রথা বাতিল করতে হবে। ৯. শ্রম অধিদপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। ১০. নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমকাজে সমমজুরি নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন