দেশজুড়ে তীব্র বন্যা ও বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানীর কাঁচাবাজারে। এ খবরে রাজধানীর খুচরা বাজারে বেড়ে গেছে সবজির দাম। তবে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল ও মসলা জাতীয় পণ্য।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর শ্যামবাজার, রায় সাহেব বাজার, নয়াবাজার, হাতিরপুল, কারওয়ান বাজারসহ অন্য বাজার ঘুরে এসব দেখা গেছে।
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির প্রভাবে গত কয়েকদিনের ব্যবধানে সব সবজির দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বেগুন ৬০-৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০-১৯০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়শ, চিচিঙ্গা, পটোল, ধুন্দল, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাকা টমেটোর কেজি প্রকারভেদে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং গাজরের কেজি ১৫০ টাকা। লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৬০ টাকা, কলার হালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
নয়া বাজারের সবজি বিক্রেতা আলম বেপারি কালবেলাকে জানায়, দেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় কৃষকের সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় অনেক ফসলের জমি ডুবে গেছে। এতে অনেক কৃষিক খেত থেকে ফসল তুলতে পারেনি। বন্যার সঙ্গে সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে ফসলী জমিতে পানি জমে মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে। এতেই কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে গেছে।
রায়সাহেব বাজারে বাজার করতে আসা মোহাম্মদ আমিন বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় আবারো সবজির দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, দেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কারণে দেশজুড়ে সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। তার পাশাপাশি কৃষকের ফসলি জমিও পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই কাঁচামরিচসহ অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে।
এদিন বাজারে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৪০ টাকা থেকে ৫৭০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। ডিম ডজন প্রতি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে গরুর মাংসের কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে মুরগির মাংস ব্যবসায়ী মো. মানিক হোসেন, মুরগির দাম আগের মতো আছে। আজকে পর্যন্ত কোন রকম সরবরাহ ঘারতি নেই। তবে সারা দেশের বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে সরবরাহ সংকট দেখা দিতে পারে।
এদিন হাতিরপুল মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেড় কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায়, আড়াই কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমে প্রতি কেজি পাঙাশ সাইজভেদে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় এবং তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আগের মতো উচ্চ দরেই বিক্রি হচ্ছে চাল, আলু ও পেঁয়াজ। চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে মিনিকেট ৭২ টাকা, আটাশ চাল ৫৮ টাকা, মোটা চাল ৫২ টাকায়, লাল বোরোধানের চাল ৯০ টাকা, সুগন্ধী চিনিগুড়া পোলার চাল ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ ও আলু। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ১১০-১২০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা ও আলু ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ভারতীয় জিরা কেজিপ্রতি প্রায় ৬৮০ টাকা, শাহি জিরা কেজিপ্রতি এক হাজার ১০ টাকা থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা, মিষ্টি জিরা কেজিপ্রতি ২৪০ টাকা, পাঁচফোড়ন কেজিপ্রতি ২০০ টাকা, রাঁধুনী কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা, মেথি কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা, চিনাবাদাম কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা, কাজু বাদাম কেজিপ্রতি এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা, পেস্তা বাদাম কেজিপ্রতি দুই হাজার ৭৫০ টাকা, ত্রিফলা কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা, জয়ফল কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা, তেজপাতা কেজিপ্রতি ১২০ টাকা, সাদা গোলমরিচ কেজিপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা, গোলমরিচ কেজিপ্রতি এক হাজার টাকা, ধনিয়া কেজিপ্রতি ২৪০ টাকা, সরিষা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কিসমিস কেজিপ্রতি ৫২০ থেকে ৫৪০ টাকা, এলাচ কেজিপ্রতি তিন হাজার টাকা, কালো এলাচ কেজিপ্রতি ২ হাজার ৮০০ টাকা, লবঙ্গ কেজিপ্রতি ১ হাজার ৪৫০ টাকা, জয়ত্রি কেজিপ্রতি দুই হাজার ৯০০ টাকা, পোস্তদানা কেজিপ্রতি এক হাজার ৮০০ টাকা, আলুবোখারা কেজিপ্রতি ৪৬০ টাকা, দারুচিনি কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা, খোলা হলুদের গুঁড়া কেজিপ্রতি ৪০০ টাকা, খোলা মরিচের গুঁড়া কেজিপ্রতি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার ভেদে মসলার দামের ভিন্নতা রয়েছে।
মন্তব্য করুন