দেশ পুনর্গঠনে বড় আকারে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য জাপান ও যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২১ আগস্ট) রাষ্টীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ও জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এই সহযোগিতা কামনা করেন।
বৈঠকশেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা তথ্য জানান। খবর বাসসের।
জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে একটা ভঙ্গুর অর্থনীতি পেয়েছি। নতুন করে বাংলাদেশকে পুর্নগঠনে জাপান সরকার বড় ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন এবং তাদের জন্য জাপান সরকারের মানবিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী ভয়াবহ অবস্থার সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বাংলদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারে তাঁর সরকারের আগ্রহের কথা জানান।
রাষ্ট্রদূত জানান, জাপানের বিখ্যাত চিত্র শিল্পী তাদাবান্দো বাংলাদেশের শিশুদের স্কুলের জন্য লাইব্রেরির ডিজাউন করে দেবেন। আগামী বছর এটি তিনি করবেন বলে উল্লেখ করেন।
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
বিশেষ করে তিনি রোহিঙ্গাদের শিক্ষার বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, তারা যখন দেশে প্রত্যাবর্তন করবে, তখন যেন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে ফিরে যেতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা বিট্রিশ হাইকমিশনারকে জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চায় সরকার। শফিকুল আলম বলেন, হতাহতের ঘটনা তদন্তে চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের যে তদন্ত দল আসবে সরকার তাদেরকে পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলে ড. ইউনূস জানান।
প্রেস সচিব জানান, নোয়াখালী, ফেনী ও কুমিল্লা জেলার বন্যা পরিস্থিতি বেশ খারাপ। তবে বন্যা মোকাবেলায় খাবার, ওষুধসহ পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সরকার। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন,‘দেশের আমূল সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব অর্ন্তবর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজন করবে।’ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল ম্যান্টেড ছিল দেশে আমূল সংস্কার করে একটা অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। প্রধান উপদেষ্টার লক্ষ্য হচ্ছে দেশের যতটা সংস্কার প্রয়োজন সেটা করা। আর সেটা করেই এই সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করবে।
তিনি জানান,বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে যুক্তরাজ্য সরকার কারিগরি সহায়তা দেয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে।
মন্তব্য করুন