অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে গণআন্দোলনে নিহত শিশুদের তালিকা তৈরি, দোষীদের শাস্তি দেওয়া ও আহত শিশুদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জোর দাবি জানিয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।
বুধবার (২১ আগস্ট) জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ২০২টি সংগঠনের পক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ দাবি জানায়।
একই সঙ্গে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম আরো জানিয়েছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং গুরুতর আহতদের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ আদালত গঠন করে নিহত ও আহত শিশুদের সঠিক তালিকা প্রকাশ, প্রত্যেকটি শিশুর হত্যার নির্মোহ তদন্ত করা এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে, সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা সংস্কার ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় সারা দেশে কমপক্ষে ৭০ শিশু-কিশোর নিহত হয়েছে।
তিনি বলেন, গুরুতর আহত হয়েছে শতাধিক শিশু। নিহতদের মধ্যে ৬০ জনের মরদেহে গুলির ক্ষতচিহ্ন ছিল। দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে নয় কিশোরের। শিশু-কিশোরদের অনেকে বিক্ষোভে গিয়ে, অনেকে রাস্তা পার হওয়ার সময় নিহত হয়েছে। এমনকি বাসায় থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে এত বেশি পরিমাণ শিশু ও কিশোরদের মৃত্যুতে দেশের সাধারণ মানুষের মতো আমরাও ব্যথিত ও শোকাহত। আমরা মনে করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ফলে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। কোনো স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে কোনো অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে এত প্রাণহানি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কারণ প্রত্যেকটি প্রাণই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কিছুর বিনিময়ে তা পূরণ হবার নয়।
এ শিশুদেরকে সব ধরনের নির্যাতন ও শোষণ থেকে রক্ষা করার জন্য শিশুবান্ধব আইন ও বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলা, বিদ্যমান আইন ও পদ্ধতির ফাঁকফোকর দূর করা। শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সঠিকভাবে বিকাশের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য আমরা সরকার ও সাধারণ নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।