বাংলাদেশ পুলিশের ৩৯ ও ৪০তম সাব-ইন্সপেক্টর ও ২৬তম সার্জেন্ট নিয়োগ লিখিত এবং মৌখিক ও বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষায় চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সচিবালয় ১ নম্বর গেটের সামনে তারা মানববন্ধন করেন।
এসময় মানববন্ধনে আসা চাকরির প্রার্থীরা দাবি করেন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও ১১৬ জন চাকরির প্রার্থী বঞ্চিত হয়েছেন। যারা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের চূড়ান্ত নিয়োগ দিয়ে ট্রেনিংয়ে পাঠনোর দাবিও করা হয় মানববন্ধনে। পরে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সঙ্গে দেখা করে ট্রেনিংয়ে পাঠনোর দাবিসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে একটি স্মরক লিপি দেন তারা। বাংলাদেশ পুলিশের চাকরির প্রার্থীর ৩৯ ও ৪০তম সাব-ইন্সপেক্টর এসআই এর পক্ষ থেকে আব্দুল্লাহ, মোশারফ হোসেন এবং ২৬তম সার্জেন্টের পক্ষ থেকে লিংকন, পাপিয়া আক্তার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেন।
মানববন্ধনে আসা চাকরি প্রার্থীরা বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মাঠ পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা, কম্পিউটার টেস্ট এবং ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রাথমিকভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হলেও অজানা কারণে আমাদেরকে ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয়নি। এতদিন ধরে পুলিশ সদর দপ্তর এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও আমাদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। এমতাবস্থায় আমরা রাস্তায় নেমে মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছি। আজ (মঙ্গলবার) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে আমাড়ের দাবির বিষয়গুলো তুলে ধরে একটি স্মরকলিপি দিয়েছি। আমাদেরকে বঞ্চিত করে আমাদের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকারকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। অতিদ্রুত আমাদের নিয়োগের দাবি জানাই। এসময় তারা নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
মানববন্ধনে আসা চাকরি প্রার্থী আনিসুর রহমান কালবেলাকে বলেন, রাস্তায় নেমে মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছি। মানববন্ধনে আসা প্রতিটা চাকরির প্রার্থী প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মাঠ পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা, কম্পিউটার টেস্ট এবং ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও আমাদের ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয়নি। আমাদের নিয়োগ দিয়ে ট্রেনিংয়ে পাঠানোর দাবিতে মানববন্ধ আসছি। আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারে সঙ্গে দেখা করে স্মরকলিপি দেওয়া হয়েছে। তিনি আমাদের পুলিশের আইজিপির সঙ্গে দেখা করতে বলছেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দেওয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত ১৩/১০/২০২৩ খ্রি. অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল (এআইজি) স্বাক্ষরক্রমে একটি স্মারক ২০২৩ সালের ক্যাডেট সাব ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগের লক্ষে লিখিত এবং মৌখিক ও বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ৯২১ জন নিয়োগ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু লিখিত এবং মৌখিক ও বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অজ্ঞাত করণে আমাদেরকে বাদ দিয়ে বিগত ২৮/১০/২০২৩ তারিখে ইন্ন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজি) স্বাক্ষরক্রমে একটি স্মারক ৮৫৭ জন প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। যাহা বৈষম্য। তাই বৈষম্য দূর করে লিখিত এবং মৌখিক ও বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষায় চূড়ান্ত ফলাফল এবং উপরোক্ত সকল বিষয় সমূহ বিবেচনা করে বৈষম্য নিরসনে আমাদের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ প্রদান করা হোক।
একইভাবে ০৮/০৬/২০২৩ খ্রি অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল (এআইজি) মহোদয়ের স্বাক্ষরক্রমে ২০২২ সালের একটি স্মরকে সার্জেন্ট অব পুলিশ পদে নিয়োগের লক্ষ্যে লিখিত এবং মৌখিক ও বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ন ৭৭৮ জন নিয়োগ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু লিখিত এবং মৌখিক ও বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হওয়া সত্তেও অজ্ঞাত করণে আমাদেরকে বাদ দিয়ে গত ০৯/ ০৭/ ২০২৩ তারিখে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজি) স্বাক্ষরক্রমে একটি স্মারকে ৭২৬ জন প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। যা বৈষম্যমূলক।
মন্তব্য করুন