ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় প্রথম অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দিয়েছে কলকাতার সিআইডি।
গত শনিবার উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাত জেলা আদালতে প্রায় ১ হাজার ২০০ পাতার ওই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিখোঁজ হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। পরে ১৮ মে বরাহনগর থানায় তার নিখোঁজের অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। পরে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ২৩ মে প্রথম জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
সিআইডি জানিয়েছে, চার্জশিটে গ্রেপ্তার কসাই জিহাদ হাওলাদার এবং মোহাম্মদ সিয়ামের নাম আছে। তবে কী উদ্দেশে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তদন্তকারীরা বলছেন, তদন্ত শেষ না হলে খুনের কারণ বলা যাবে না। তা ছাড়া, এই মামলায় মূল অভিযুক্তকে এখনো জেরা করা যায়নি।
জানা গেছে, আদালতের নির্দেশে জিহাদকে দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে সিআইডি হেফাজতে রয়েছেন সিয়াম।
জিহাদ ও সিয়ামকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ বিভিন্ন সময় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি এলাকার বাগজোলা খালে তল্লাশি চালিয়েছিল। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় একাধিক হাড়গোড়। প্রাথমিকভাবে সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই হাড়গোড় মানুষের।
জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম পুলিশকে জানিয়েছিল, তিনি পলাতক আখতারুজ্জামানের অধীনে ৬০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। তার নির্দেশেই তিনি জিহাদকে কলকাতা এনে রাজারহাটে ভাড়া ফ্ল্যাটে রেখেছিলেন। আনোয়ারুল আজিমকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র, প্লাস্টিকের চাদর, ব্যাগ- সবকিছুই কলকাতার নিউমার্কেট এলাকা থেকে কিনে আনা হয়েছিল। মামলার অন্য দুই অভিযুক্ত আসামি ফয়সাল সাজি ও মুস্তাফিজ রহমান মাংস কাটার মেশিন কিনে এনেছিলেন। আজিমকে হত্যার পর তার দেহ থেকে মাংস ও হাড় আলাদা করা হয়। এরপর মাংস কাটার মেশিনে ছোট ছোট টুকরা করা হয়।
সিআইডি সূত্র আরও জানায়, সেই খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ আনোয়ারুল আজিমের কি না, তা জানতে ডিএনএ পরীক্ষা করতে চান তদন্তকারী কর্মকর্তারা। সেই লক্ষ্যে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন এবং রক্তের সম্পর্ক থাকা অন্য ব্যক্তিদের ডেকে তাদের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ডোরিনকে কলকাতায় আসার জন্য সিআইডির পক্ষ থেকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। তবে তিনি এখনো কলকাতায় আসতে পারেননি।
মন্তব্য করুন