১৩-২২ ব্যাচের পদোন্নতি ও জ্যৈষ্ঠতা বঞ্চিত সরকারের ১৯৫ জন উপসচিবকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) পদবঞ্চিত কর্মকর্তাদের পক্ষে এ আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। পদ বঞ্চিত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ের মধ্য দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
লিখিত আবেদনে বলা হয়েছে, পদোন্নতির সকল যোগ্যতা ও শর্ত পরিপালন করা সত্ত্বেও আমাদের যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি প্রদান না করে ন্যায়সংগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ০১-০৩ নম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রধানত প্রশাসন ক্যাডারের ২৪, ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ২২তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাগন ইতোপূর্বে যুগ্মসচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়াও কথা উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়েছে, আমরা অন্যান্য ক্যাডারের ১৩তম ব্যাচ থেকে ২২তম ব্যাচের ১৯৫ জন কর্মকর্তা সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২ অনুযায়ি যুগ্মসচিব হিসেবে সকল শর্ত পূরণ করেছি। তাদের মধ্যে ১৩৭জন কর্মকর্তা বিগত সরকারের আমলে একাধিকবার পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছে।
বিগত সরকারের আমলে একপেশে ও সংর্কীর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিসহ সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে যে সকল সরকারি কর্মকর্তাকে পদোন্নতি বঞ্চিত করার মাধ্যমে জনপ্রশাসনে নানাবিধ বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে, বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে তা নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে হাজারো ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন এই বাংলাদেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পূর্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সূত্রোক্ত চার নং প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শুধু প্রশাসন ক্যাডারের ২২তম ব্যাচ পর্যন্ত বঞ্চিত উপসচিবদের পদোন্নতি নিশ্চিত করলেও অন্যান্য ক্যাডারের ১৩-২২তম ব্যাচের পদোন্নতির জন্য যোগ্য ১৯৫জন উপসচিবের ন্যায্য দাবি আমলে নেওয়া হয়নি।
আবেদনে আরও বলা হয়, সিনিয়র ব্যাচের কর্মকর্তাগন জুনিয়র ব্যাচের সঙ্গে পদোন্নতি পেলেও পরবর্তী পদোন্নতি বিধিমালার শর্ত পূরণসাপেক্ষে ওই জুনিয়র ব্যাচের কর্মকর্তাদের পূর্বের উচ্চতর ধাপে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন, এটাই জনপ্রশাসনের দীর্ঘদনের রীতি। ক্রমাগতভাবে প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা, বিসিএস সিনিয়রিটি রুলস ১৯৮৩ লঙ্ঘন করে জ্যেষ্ঠতা হরণপূর্বক জুনিয়রদের অধীনে কাজ করতে বাধ্য করায় আমরা মানসিক, শারীরিক, আর্থিক ও সামাজিকভাবে অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পতিত হয়েছি। এরমধ্য দিয়ে ক্যাডার/শ্রেণি বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে, যা সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। পদোন্নতিবঞ্চিত এ সকল কর্মকর্তা বেতন স্কেলের শেষ ধাপে আছেন বিধায় এ পদোন্নতির ক্ষেত্রে সরকারের অতিরিক্ত কোন অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন হবে না বলেও লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন