চারদফা দাবিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে দেওয়া এই স্মারকলিপিতে হজ সংশ্লিষ্ট ভ্যাট ও অন্যান্য চার্জ যথাসম্ভব সর্বনিম্ন করা, ভর্তুকি প্রদানের সম্ভাবনা যাচাই, সরকারি বিমান সংস্থার ভ্রমণ ব্যয় হ্রাস এবং এজেন্সিগুলোর নিয়মিত তদারকি ও পরিদর্শনের দাবি জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়- বহু কষ্ট, ত্যাগ, সংগ্রাম, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা। শত শত মানুষের এই সুমহান আত্মত্যাগ যদিও আমাদের স্বৈরাচারের শোষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্ত করেছে, সাথে চাপিয়ে দিয়ে গেছে এক সাগর রক্তের ঋণের বোঝা। এই ঋণ কখনো পরিশোধ সম্ভব না হলেও শুধু রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে তাদের সুমহান আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মান প্রদান করা এবং ঋণের বোঝা কিছুটা হলেও হালকা করা সম্ভব। ধর্মীয় বিধান পালনের স্বাধীনতা ও সুযোগ সকল নাগরিকের মৌলিক এবং সাংবিধানিক অধিকার হজ ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম পবিত্রতম এই ইবাদতের আত্মিক উন্নতি, সামাজিক সম্প্রীতি ও বিশ্বভাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব সর্বাধিক সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জীবনের চূড়ান্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা হলো পবিত্র হজ পালন করা। হজ যদিও শুধু সচ্ছলদের ওপর ফরজ, সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের পুঁজিবাদী তোষণ-শোষণে হজ সচ্ছলদেরও প্রায় নাগালের বাইরে বেরিয়ে অতি বিত্তবানদের বিলাসে পরিণত হয়েছিল।
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার হজ-উমরাহ নিয়ে গৃহীত ইতিবাচক পদক্ষেপ আমাদের মাঝে আশার আলো জাগ্রত করেছে। মহান সৃষ্টিকতার কাছে তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি এবং আশা করি এ বিষয়ে তার ধারাবাহিক সাফল্য অব্যাহত থাকবে। শুধুমাত্র রাষ্ট্রের সচেতন নাগরিক এবং শিক্ষার্থী হিসেবে নিম্নলিখিত ৪টি দাবির প্রতি আলোকপাত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করায় নিম্নোক্ত দাবিগুলো পর্যালোচনার জন্য প্রস্তাবনা তুলে ধরা হলো :
১. হজের মোট খরচ হ্রাস করার লক্ষ্যে হজ সংশ্লিষ্ট ভ্যাট এবং অন্যান্য চার্জ যথাসম্ভব সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা।
২. পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর ন্যায় হজ পালনের ব্যক্তিগত খরচ হ্রাসের উদ্দেশ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি প্রদান করার সম্ভাবনা যাচাইয়ে কমিশন গঠন করা।
৩. হজ মৌসুমে সরকারি বিমান সংস্থার ভ্রমণ ব্যয় যথাসম্ভব কমানোর মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া যথাসম্ভব হ্রাস করা। হজের মতো পবিত্র ধর্মীয় বিধানকে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা না করে মহানুভবতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা।
৪. সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ এজেন্সিগুলোতে নিয়মিত তদারকি ও পরিদর্শনের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও ন্যায্য সেবা প্রদান নিশ্চিত করে হজযাত্রীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর মান বৃদ্ধি করা।
মন্তব্য করুন