প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের দাবিতে আলটিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ নিয়ে কথা বলেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
শনিবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টায় হাইকোর্ট চত্বরে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের দুপুর ১টার মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দেন। এ সময় শত শত শিক্ষার্থী হাইকোর্টের ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রায় একই সময় সাংবাদিকদের ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ফুল কোর্ট মিটিং ডেকেছিলেন। আসিফ মাহমুদের স্ট্যাটাস থেকে জেনেছি, এটি পরাজিত স্বৈরাচারী শক্তির পক্ষে ছিল। যদিও প্রধান বিচারপতি অত্যন্ত শ্রদ্ধার তবুও তাকে নিয়ে প্রশ্ন আছে।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া তিনি প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা নিয়েছেন, ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের কাছ থেকে সোনার তরবারি উপহার নিয়েছেন। এসব আইন ও নীতির বিরোধী। এসব কারণে তাকে নিয়ে প্রশ্ন ছিল।
আসিফ নজরুল বলেন, যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হচ্ছিল তখন প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন- আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন করা যায় কি না? মানুষ বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। আমি যেটা জানি, ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে আগেই তার পদত্যাগের দাবি উঠেছিল। আজ আবার তিনি ফুল কোর্ট মিটিং ডাকেন। এটি একটি অনভিপ্রেত ঘটনা। আমরা মনে করি, সুপ্রিম কোর্টকে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে দাঁড় করানোর চেষ্টা কারও করা উচিত নয়। সবার যেন শুভবুদ্ধির উদয় হোক। ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতি সবাই যেন সম্মান দেখায়।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা না করে ফুল কোর্ট মিটিং ডাকায় হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার (১০ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই কর্মসূচি দেন।
তিনি বলেন, ঢাকার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীসহ আপামর জনতাকে আহ্বান করা হচ্ছে, যত দ্রুত সম্ভব আপনারা প্রতিটি এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের দিকে আসুন। হাইকোর্ট ঘেরাও করা হবে। সেই সঙ্গে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একত্র হয়ে মিছিল বের করুন। দেশের প্রতিটি জেলাকোর্ট, জজকোর্ট ও বিচারপতিদের বাসভবন ঘেরাও করা হবে। আজ ফ্যাসিবাদী বিচারব্যবস্থাকে আজ সমূলে উৎখাত করবে গোটা বাংলাদেশ। দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির নামে যেই ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট শিক্ষক উইং রয়েছে তা আজ ভেঙেচুরে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে, সকল সিন্ডিকেটকে আজকেই ভেঙে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, পরাজিত শক্তির যেকোনো প্রকার ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই এর প্রতিবাদে জড়ো হয়েছেন। আমরা আগেই প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলাম। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে উসকানি দিলে এর ভয়াবহ পরিণাম ভোগ করতে হবে।
মন্তব্য করুন