নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। এ সরকারের উপদেষ্টা রয়েছেন ১৬ জন। সরকারের এসব উপদেষ্টার মধ্যে দপ্তর বণ্টন শুরু হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পেয়েছেন ফরিদা আখতার। শুক্রবার (০৯ আগস্ট) উপদেষ্টাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করা হয়।
লেখক, গবেষক ও আন্দোলনকর্মী ফরিদা আখতারের জন্ম চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন ফরিদা আখতার। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তার কাজের প্রধান জায়গা।
বর্তমানে তিনি উবিনীগ-এর (উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে নারী ও গাছ, কৈজুরী গ্রামের নারী ও গাছের কথা।
তিনি নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্যসম্পদ, তাঁতশিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে নিবিড়ভাবে দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করছেন।
এদিকে ড. ইউনূসের হাতে দেওয়া হয়েছে ২৭ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো-
১. মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৩. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ৪. শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৫. সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ৬. খাদ্য মন্ত্রণালয় ৭. গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৮. ভূমি মন্ত্রণালয় ৯. বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ১০. কৃষি মন্ত্রণালয় ১১. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২. রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৩. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৪. বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ১৫. নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়; ১৬. পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১৭. মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৮. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ১৯. তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ২০. প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২১. বাণিজ্য মন্ত্রণালয়; ২২. শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২৩. সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২৪. বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২৫. মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২৬. পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২৭. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানের পর জাতির উদ্দেশে কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, বিভিন্ন চেষ্টায় ব্যবহৃত হয়ে যারা অপরাধ সংগঠিত করেছে তাদের আইনানুগ বিচারের মাধ্যমে শিগগিরই উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। একই কথা সব মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। সর্বত্র অপরাধীদের বিচার হবে।
ড. ইউনূস বলেন, আজ প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ও তার সদস্যরা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে উপভোগ করবেন। তারা দেশকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যাবেন এবং দেশবাসী ও জগৎবাসীকে উপভোগ করার সুযোগ করে দেবেন। আমি জাতির পক্ষ থেকে নির্ভয়ে আনন্দচিত্তে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে আসার অনুরোধ করছি।
বৃহস্পতিবার ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা রেখে মোট ১৭ সদস্যের উপদেষ্টাদের নামের তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরে রাত সোয়া ৯টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে শপথ পাঠ করান।
মন্তব্য করুন