শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় প্রাণহানি ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিন দফা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী সমাজ।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী সমাজের আমির হজরত সৈয়দ হুমায়ূন কবীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচিসমূহ হলো- আগামী ২৪ আগস্ট বাদ আসর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে মানবাধিকার সমাবেশ, ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাং রোড ট্রাক স্ট্যান্ডে মানবাধিকার সমাবেশ এবং ২৬ অক্টোবর বিকেল ৩টায় গাজীপুর সদরের শিববাড়ি মোড়ে মানবাধিকার সমাবেশ। ২৭, ২৮ ও ২৯ আগস্ট গাজীপুর সদরের বটতলা উনিশে চত্বর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব অভিমুখে তিন দিনব্যাপী শান্তিপূর্ণ গণজাগরণ যাত্রা। দেশব্যাপী টিমভিত্তিক গণসংযোগ, পথসভা ও লিফলেট বিতরণ এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণের সঙ্গে মতবিনিময় ও চিঠি প্রদান করা হবে।
ইসলামী সমাজের আমির সরকার, প্রশাসন, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, ছাত্র-জনতাসহ দেশবাসী সকলকে সংঘাত ও সংঘর্ষের পথ পরিহার করে ইসলামী সমাজের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আইন-বিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘দেশে চলমান নাজুক পরিস্থিতির মৌলিক কারণসমূহ এবং সমাধানের উপায়’-বিষয়ক এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
দেশ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে উল্লেখ করে ইসলামী সমাজের আমির বলেন, দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশাহারা। দেশের মানুষ বিভিন্ন ইস্যুতে দল ও উপদলে বিভক্ত হয়ে অনৈক্যের পথে চলছে। মানুষের জীবনে সুশাসন ও ন্যায়বিচারের পরিবর্তে বৈষম্যের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। চাকরিতে কোটা বৈষম্য ইস্যু নিয়ে আন্দোলন, আন্দোলন দমনের নামে মানুষ হত্যা এবং দেশের উন্নয়নমূলক স্থাপনাসহ মাল-সম্পদ ধ্বংস করার নজিরবিহীন ঘটনা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটে গেছে। ছাত্রছাত্রী, শিশু, নারী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক ও পুলিশসহ শত শত মানুষের প্রাণ ঝরে গেছে। এসব হত্যাকাণ্ড এবং দেশ ও জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করার কাজে কারা জড়িত, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচার করতেই হবে। আমরা এসব হত্যাকাণ্ডসহ সব অমানবিক কর্মকাণ্ডের তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে যারা নিহত ও আহত হয়েছে তাদের শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই।
সৈয়দ হুমায়ূন কবীর বলেন, আন্দোলনের শুরুতে সরকার শিক্ষার্থীদের চাকরিতে কোটাসংক্রান্ত ন্যায্য দাবি মেনে নিলে এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতো না।
তিনি বলেন, বৈষম্য শুধু চাকরির ক্ষেত্রেই নয়, দেশের প্রতিটি সেক্টরে আজ বৈষম্য। শিক্ষা, চিকিৎসা, অর্থনীতিসহ যেদিকেই আমরা তাকাই শুধুই বৈষম্য। সব বৈষম্যমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করে মানুষের জীবনে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে সবার সব অধিকার আদায় ও সংরক্ষণ করতে হলে আল্লাহর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আইন-বিধান প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
ইসলামী সমাজের কেন্দ্রীয় নেতা মুহাম্মাদ ইয়াছিনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল মুহাম্মাদ ইউসুফ আলী মোল্লা, সোলায়মান কবীর, আমীর হোসাইন, আজমুল হক, মো. নুরুদ্দিন, আসাদুজ্জামান, সেলিম মোল্লা, আবু বকর সিদ্দিক, হাফিজুর রহমান, সোহাগ আহমেদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন