কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সারা দেশে যে সহিংসতায় প্রাণহানি ঘটেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে, এটা আমরা চাই না। আর সহিংসতা নয়, দেশে শান্তি চাই। তাই সন্ত্রাস-সহিংসতা ও সংঘাতের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা ।
শনিবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সন্ত্রাস-সংঘাত-সহিংসতা নয় : চাই শান্তি-সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিশিষ্টজনরা একথা বলেন।
নতুন প্রজন্মকে আহ্বান করে মতবিনিময় সভায় বিশিষ্টজনরা বলেন, এদেশ যেন শান্তি ও সম্প্রীতির পুণ্যভূমি হয়ে বিশ্বের মাঝে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে, নতুন প্রজন্মের কাছে সেই আহ্বান জানান। পাশাপাশি দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্ত্রাস-সহিংসতা ও সংঘাতের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটির নেতারা।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক আলী হাবিব ও ফরহাদ মাহমুদের লেখা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই যে এত সহিংসতা, সংঘাত, নৈরাজ্য, মৃত্যু- এর দায় কে নেবে? দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কি দায় নেই? রাজনীতি কেন এত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেবে? এতে লোকসানটা কার?
তিনি আরও বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের বাতাবরণে নতুন প্রজন্মকে রাজনীতিবিমুখ করে তোলা হচ্ছে। কোটা আন্দোলনের মধ্যে অপরাজনীতি ঢুকিয়ে দেশের একটি প্রজন্মকে রাজনীতির প্রতি তো বটেই, রাজনীতিকদের প্রতিও বীতশ্রদ্ধ করে তোলা হয়েছে। ফলে আগামী প্রজন্ম রাজনীতিবিমুখ হবে। মেধাবী একটি প্রজন্ম রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। রাজনীতিতে সামাজিক দুষ্কৃতকারীরা নিজেদের স্থায়ী আসন করে নেবে। রাজনীতি চলে যাবে নষ্টদের দখলে।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়টা সুখকর নয়। গত ৫০ বছর বাংলাদেশকে ভালোবেসে যারা লড়াই করে গেছেন তারা কোনো সংকটে ভয় পায় না। কাজেই এই আঘাত থাকবে না। আমাদের সেই বিশ্বাস আছে। আমরা রাজনীতিকে সৎ পথে ডাকতে চাই।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক নাট্যজন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। সংগঠনের সদস্য সচিব মামুন আল মাহতাবের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের প্রধান ভান্তে বুদ্ধানন্দ মহাথেরো, খ্রিষ্টীয় ধর্মযাজক রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ইউসুফ রাজ, বঙ্গবন্ধু গবেষক মেজর (অব.) আফিজুর রহমান প্রমুখ।