কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পাশে অন্যদের মতো দাঁড়িয়েছেন শিল্পীরাও। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে সমবেত হন শিল্পীসমাজ।
এ সময় বাঁধন বলেন, আমি এ অন্যায়ের সুষ্ঠু তদন্ত চাই। সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক এবং সেই বিচারের প্রকাশ্য প্রয়োগ আমরা দেখতে চাই।
জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী আরও বলেন, আমি এখন মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় বিবেকবান মানুষের ঠিক থাকা সম্ভব না। যতদিন ছাত্ররা মাঠে আছে, আমি ততদিন তাদের সঙ্গে থাকব।
বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে এক হয়েছিলেন প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, চলচ্চিত্রকার আকরাম খান, অভিনেতা মোশাররফ করিম, সিয়াম আহমেদ, অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা, জাকিয়া বারী মম, অভিনেত্রী সাবিলা নূর, সৈয়দ আহমেদ শাওকি, চলচ্চিত্রকার অমিতাভ রেজা, পিপলু আর খান, আদনান আল রাজিব ও রেদওয়ান রনি।
আরও উপস্থিত ছিলেন, অভিনেতা ইরেশ জাকের ও তার স্ত্রী মীম, নাজিয়া হক অর্ষা, ওয়াহিদ তারেক, ঋতু সাত্তার, দীপক সুমন, আরমিন মুসা, প্রবর রিপন, শঙ্খ দাশগুপ্ত, রাকা নওশিন নওয়ার, অভিনেত্রী নাদিয়া ও শাহানা রহমান সুমিসহ অনেকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দেয়। একপর্যায়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেয়। তাদের সঙ্গে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দেখা যায়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ নামের অবরোধও দেয়। একপর্যায়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীসহ সারা দেশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত করে হল খালি করার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ করা হয়। গত ১৮ জুলাই আন্দোলনকারীরা সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেয়। ব্যাপক ভাঙচুর হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরে ২১ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা হয়। এতে সরকারি হিসেবে পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৫০ জন নিহত হয়েছেন। সহিংসতা দমনে সরকার অভিযান চালালে গত ২২ জুলাই থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। ক্রমে বাড়ে কারফিউ শিথিলের সময়। ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হয় অফিস।
মন্তব্য করুন