ভবিষ্যতে আর কখনো যেন ফেসবুক, ইন্টারনেট বন্ধ করা না হয় তার দাবি জানিয়েছে ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব।
আজ বুধবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর বনানীতে নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ই-ক্যাব নেতারা।
ফেসবুক বা ইন্টারনেট বন্ধ হলে দেশের ডিজিটাল ব্যবসায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আঘাত পড়ে উল্লেখ করে সংগঠনটির দাবি। ভবিষ্যতের জন্য ইন্টারনেট চালু রেখেই যেন ‘কনটিনজেন্সি প্ল্যান’ তৈরি ও বাস্তবায়ন করা হয়। কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ইন্টারনেট এবং ফেসবুক বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের জন্য নীতিগত সহায়তা এবং বেশকিছু দাবিও তুলে ধরেছে সংগঠনটি।
লিখিত বক্তব্যে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, গত ১৩ দিনে এই খাতে প্রায় এক হাজার ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রতিদিন তার পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে এই ব্যবসা পুরোই বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ইন্টারনেট চালু থাকলেও গতি কম থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বন্ধ থাকার কারণে এখনো সংকট কাটিয়ে উঠেনি। এ ছাড়া কারফিউ ও নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ বিভিন্ন কারণে ই-কমার্স খাতের ৯৫% শতাংশ লেনদেন এখনো বন্ধ রয়েছে। ই-ক্যাব থেকে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য জরিপ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
শমী কায়সার বিগত কয়েক দিন ধরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, মোবাইল ইন্টারনেট ও ফেসবুক চালু করার জন্য ই-ক্যাব থেকে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা তুলে ধরেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কেউ এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না এবং পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
এসময় ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য বেশকিছু দাবিও তুলে ধরা হয় ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে। এরমধ্যে ব্যাংক ঋণ থাকা উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ন্যূনতম ৬ মাস বাড়ানো, নতুন করে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, লজিস্টিকস ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে ভ্যাট মওকুফ করা, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি মওকুফ এবং মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি অন্যতম। এ ছাড়া ফেসবুকে সচল থাকা বিজ্ঞাপনের মূল্য ফেরত বা পূণবিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকের সাথে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এধরনের সংকটে ইন্টারনেট চালু রেখেই ‘কনটিজেন্সি প্ল্যান’ তৈরি এবং বাস্তবায়নের দাবি জানায় সংগঠনটি। এজন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারে মনে করে ই-ক্যাব।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে ই-ক্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, সরকার যদি আশ্বস্ত করে যে আগামীতে ইন্টারনেট বন্ধের মতো আর ঘটনা ঘটবে না তাহলে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ইতিবাচক ইমেজ ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ব্র্যান্ডিং করা যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মাঝে ই-ক্যাবের সহসভাপতি সৈয়দা আম্বারীন রেজা, সাধারণ সম্পাদক নাছিমা আক্তার নিশা, সহসাধারণ সম্পাদক খন্দকার তাসফিন আলম, অর্থ সম্পাদক আসিফ আহনাফ, পরিচালক শাহারিয়ার হাসান, মো. সাইদুর রহমান সাঈদ, মো. ইলমুল হক সজীব এবং অর্ণব মুস্তাফা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন