মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলমান অস্থিরতার প্রসঙ্গ আবারও উঠে এসেছে। স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। এতে তিনি বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বশেষ অবস্থান জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ছাত্র বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্যাটেল বলেন, সরকারি ও ব্যক্তিগত উভয় ক্ষেত্রেই আমরা বর্তমান পরিস্থিতির একটি স্থায়ী এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আহ্বান জানিয়েছি। তেমনি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতার প্রতি আমাদের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা সারা বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালুর বিষয়ে জেনেছি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিসেবাগুলো সম্পূর্ণ এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্তের আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে বাংলাদেশের মানুষ এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারে।
এর আগে বেশ কয়েকবার কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গ ব্রিফিংয়ে উঠে আসে। ২৪ জুলাই ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, আমি একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চাই, আমরা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সব সহিংসতার নিন্দা জানাই। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সহিংসতার নিন্দা জানাই। আন্দোলনকারী কোনো পক্ষের সহিংসতারও আমরা নিন্দা জানাই, যারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে সহিংসতার অজুহাতে পরিণত করেছে। সব ক্ষেত্রেই আমরা সহিংসতার নিন্দা জানাই।
এদিকে, কোটা আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আবারও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘ। স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ জুলাই) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বাংলাদেশ ইস্যুতে জাতিসংঘ খোঁজ রাখছে বলে জানান।
তিনি বলেন, মহাসচিব বর্তমান ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত তরুণদের গণগ্রেপ্তার এবং রাজনৈতিক বিরোধিতার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উঠে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মহাসচিব বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি সোমবার ছাত্র বিক্ষোভ আবার শুরু হওয়ার খবর জেনেছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে শান্ত ও সংযমের জন্য তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। মহাসচিব বর্তমান ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত তরুণদের গণগ্রেপ্তার এবং রাজনৈতিক বিরোধিতার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
ডুজারিক বলেন, মহাসচিব মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার, যথাযথ প্রক্রিয়ার গুরুত্ব এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের ওপর জোর দেন। নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিবেদনে যে তথ্য এসেছে তাতে তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি সহিংসতার সব কর্মকাণ্ডের অবিলম্বে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। আমরা রাজধানী ঢাকা এবং নিউইয়র্কে প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের কাছে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
মন্তব্য করুন