কোটা আন্দোলন ঘিরে লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন এবং জামায়াত-শিবিরের একটি গ্রুপ রাজধানীতে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালায় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, কিছু অনুপ্রবেশকারী কোটা আন্দোলন পুঁজি করে বাংলাদেশের নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে সন্ত্রাসী কায়দায় অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা করে। সে লক্ষ্যে লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি, বিএনপির অঙ্গসংগঠন এবং জামায়াত-শিবিরের একটি গ্রুপ ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে হামলা চালায়। তারা বিটিভি ভবন, সেতু ভবন, ডাটা সেন্টার, মেট্রোরেল, পুলিশের ট্রাফিক বক্স, থানায় এবং পুলিশকে টার্গেট করে তাদের ওপর হামলা করে, পুলিশ সদস্যদের হত্যা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটাই—পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়া।
হারুন বলেন, রাজধানীসহ দেশজুড়ে যারা নাশকতা চালিয়েছে, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। নাশকতাকারীরা দেশের যে প্রান্তেই থাকুক, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। যারা এসব নাশকতার সঙ্গে যুক্ত নয়, তাদের কাউকে কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না। এরই মধ্যে ১৫০ জনের মতো গ্রেপ্তার করা হয়ছে। যারা নির্দেশ দিয়েছে, যারা মাঠে কাজ করেছে, তাদের সবার তথ্য আমাদের কাছে আছে। কেউ যদি মনে করে পার পেয়ে যাবে, তাহলে সেটি ভুল।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোন, মেসেজ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে আমরা পেয়েছি, লন্ডনে থাকা তারেক রহমান এবং বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে তারা এই ধ্বংসলীলা চালায়। তারা কেউ নির্দেশ দিয়েছে, কেউ মাঠে কাজ করেছে, কেউ অর্থ দিয়েছে, গুলি দিয়েছে, গান পাউডার দিয়েছে। যারা এসব করেছে, তাদের অনেকের নাম এবং মোবাইল নম্বর আমরা পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, রফিকুল আলম মজনু, সাইফুল ইসলাম নীরব, আমিনুল হক, রবিউল ইসলাম নয়নসহ অসংখ্য নেতা এসব নাশকতার নেতৃত্ব দেন। তাদের অনেককেই আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাদের মোবাইল নিয়ে মেসেজ চেক করেছি। সেখানে এই সহিংসতার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি পাওয়া গেছে।
হারুন বলেন, মঙ্গলবার সকালে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তরিকুল আলম তেনজিংকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তিনি বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন। তার সঙ্গে তারেক রহমানের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। তিনিই তারেকের নির্দেশনা অন্য নেতাদের কাছে পৌঁছে দিতেন। এ ছাড়া জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. সামিউল হককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা কীভাবে নাশকতার ঘটনায় টাকা দিয়েছে এবং কীভাবে নির্দেশনা দিয়েছে, সে তথ্য পেয়েছি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার সম্পদ নষ্ট করছে, তারা এই দেশের উন্নয়ন চায় না। ১৯৭১ সালে রাজাকার-হানাদার বাহিনীর মতো কায়দায় তারা পুলিশের ওপর হামলা করে মনোবল ভেঙে দিতে চেয়েছিল। যারা নাশকতা চালিয়েছে তারা দুর্বৃত্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন