কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ছয় ছাত্র ও এক শ্রমিক হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদসহ (এসএসপি) ২১টি শ্রমিক সংগঠন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) এসএসপির প্রধান সমন্বয়ক এএএম ফয়েজ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়- সারা দেশের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের চাকরির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক কোটা সংস্কারের দাবিতে মেধাবী সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে নিরীহ ছয় মেধাবী শিক্ষার্থী ও চট্টগ্রামে একজন শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের বিচারের দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদসহ একুশটি শ্রমিক সংগঠন।
যৌথ বিবৃতিতে শ্রমিক দলের প্রধান উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম খান, শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম, এসএসপির প্রধান সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এ এম ফয়েজ হোসেন, এসএসপি নির্বাহী সমন্বয়ক ও সভাপতি বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদ আব্দুর রহমান, এসএসপির সমন্বয়ক ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোসারেফ হোসেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি কমরেড টিপু বিশ্বাস, ইসলামিক শ্রমিক আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক মৌলানা খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ বহুমুখী শ্রমজীবী হকার সমিতি নেতা বাচ্চু ভুইয়া, গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন সভাপতি হারুনুর রশিদ, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোড়ক, জাতীয় শ্রমিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদ, ভাসানী অনুসারী শ্রমিক আন্দোলন নেতা বাবুল বিশ্বাস, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলন নেতা শাহ আলম ও সোহেল শিকদার, নির্মাণ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গনি, প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ নেতা নেক মোহাম্মদসহ অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
নেতারা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন যে, নিহত মেধাবী ছাত্রদের সঙ্গে চট্টগ্রামে ফার্নিচার শ্রমিক ফারুক কে হত্যার মধ্য দিয়ে চলমান আন্দোলনে ঘি ঢেলে দিয়েছে শাসকগোষ্ঠী। মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়ে কোটা সংস্কারের আন্দোলন করে আসছিল। সরকার প্রধান থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেধাবী ছাত্রদের আন্দোলনকে কটাক্ষ ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তাণ্ডব সভ্য দুনিয়ার সকল বর্বরতাকেই হার মানিয়েছে।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, আমরা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে চাই- কোটার যৌক্তিক ফয়সালা করতে হবে। ছাত্র ও শ্রমিক হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। শহীদ পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে হবে।
নেতারা আরও উল্লেখ করেন- অতীতের যে কোনো আন্দোলন ছাত্র ও শ্রমিক এক কাতারে মিশে আন্দোলনের সফলতা এনে দিয়েছে। আজ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে ছাত্র ও শ্রমিকের রক্তদানের মধ্য দিয়ে তাদের আবার এক কাতারে মিলিত করেছে। চট্টগ্রামের নিহত ফার্নিচার শ্রমিক ফারুকের রক্তের শপথ নিয়ে শ্রমিক সমাজ সাধারণ শীক্ষার্থীদের যোক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলনে পাশে থাকার অঙ্গীকার করছে।
নেতারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বীর আবু সাঈদ, আসিফ, রাফি, আদনান, সাব্বির, মিম, মিতাসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। কোটা আন্দোলনের শ্রমিক শ্রেণির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সমর্থন ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন