কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:২৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

উল্টো রথে শেষ হলো রথযাত্রা

শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। ছবি : কালবেলা
শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। ছবি : কালবেলা

উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। সোমবার (১৫ জুলাই) বেলা ৩টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে বের হয় উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।

বর্ণিল সাজে সজ্জিত ৩টি বিশাল রথে জগন্নাথ দেব, শুভদ্রা ও বলরামের প্রতিকৃতি নিয়ে বের হয়। এ সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার উল্টো রথযাত্রার উদ্বোধন করেন। পরে তা স্বামীবাগের বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। এর মধ্য দিয়েই সমাপ্তি ঘটে রথযাত্রা উৎসবের ৯ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের।

এদিন দুপুরে উল্টো রথযাত্রা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সহসভাপতি সুব্রত পাল, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ড. চিত্তরঞ্জন মজুমদার ছাড়াও অনেকে। আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমের অধ্যক্ষ চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী।

এ সময় প্রধান অথিতির বক্তব্যে মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার উদ্দেশ্য ও তার এই যাত্রার মহিমা শেখায় ভ্রাতৃত্ববোধ। রথযাত্রা আমাদের সবার মিলন মেলা। এ দেশ সব ধর্মের মানুষের অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে যে যার মতো করে ধর্মীয় উৎসব পালন করবেন। কেউ কারো প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব দেখাবেন না। আমরা রথযাত্রার পরও যেন একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখি। সবার বিপদে পাশে দাঁড়াই। মৌলবাদী বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণে আমারা সবাই যেন তাকে সহযোগিতা করি।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার ভক্ত ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবে অংশগ্রহণ করে। রথযাত্রার এ শেষ পর্বকে ঘিরে রাজধানীতে উৎসবের মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে। এদিন সকাল থেকেই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে। রথ টানার জন্য সড়কের দুপাশে জড়ো হন ভক্তরা। যাত্রাপথে ভক্তরা চলন্ত রথের দড়ি ছুঁয়েছেন। এ সময় রথ থেকে ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। রঙিন পতাকা, আলোকসজ্জা আর ঢাক-ঢোলের তালে মুখরিত হয় রাজধানীর রাস্তাঘাট।

উল্লেখ্য, রথযাত্রার পর জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা মাসির বাড়ি বৃন্দাবন থেকে নিজ দ্বারকায় মন্দিরে ফিরে আসেন। এ যাত্রাকেই বলা হয় উল্টো রথযাত্রা। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, উল্টো রথযাত্রায় অংশ নিলে পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং মনের বাসনা পূরণ হয়। গত ৭ জুলাই আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন) বাংলাদেশের উদ্যোগে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় রথযাত্রার মূল অনুষ্ঠান। এর মধ্য রয়েছে হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্বশান্তি ও মঙ্গলকামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, পদাবলি কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভাগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন। ওইদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উদ্বোধনের পর রথযাত্রা করে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নেওয়া হয়। টানা ৯ দিন চলার পর উল্টো রথযাত্রা হয়। প্রথা রয়েছে, মাসির বাড়ি থেকে পোড়া পিঠে খেয়ে আবার রথে চড়ে বাড়ির পথে রওনা দেন জগন্নাথদেব। এই যাত্রাকে বলা হয় উল্টোরথ। সুসজ্জিত রথে বসিয়ে দেবতাদের রথ টানা হয়। রথের শীর্ষে থাকেন মাধবদের বিগ্রহ। তাকে বহন করা রথটি ভক্তরা টেনে নিয়ে যায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় ১৩ কেজি রুপা জব্দ

পুলিশ সদস্যদের যে সুখবর দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আল-আকসা ভাঙার ষড়যন্ত্রে প্রকাশ্যে ইসরায়েল

নিকারাগুয়ায় বিরোধীদের দমন-পীড়ন / ২৫০ জনের বেশি সরকারি কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

৬০০ কর্মী নিয়ে মহাসড়কে ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা অভিযান 

রাবির ভর্তি পরীক্ষায় শিবিরের হেল্প ডেস্ক থেকে ফোন চুরির চেষ্টা

স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পণ স্বামীর

সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু করতে হবে : এ্যানি

রাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে একাধিক ভুল

বিয়ের আগে ছেলে-মেয়ের ৭টি জরুরি টেস্ট

১০

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ

১১

পরীক্ষার হলে বসে বন্ধুকে প্রশ্ন পাঠালেন পরীক্ষার্থী

১২

কেউ ঘুষ চাইলে কী করতে হবে, জানালেন আসিফ মাহমুদ

১৩

নির্বাচন ইস্যুতে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

১৪

কুমিল্লায় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক কারাগারে

১৫

রাজনৈতিক বিভাজন এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা : ঢাবি ভিসি 

১৬

চট্টগ্রাম কারও একার শহর নয় : মেয়র শাহাদাত

১৭

‘অজানা কারণে পাকিস্তান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়নি’

১৮

প্রধান উপদেষ্টার কাছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা 

১৯

দুই আ.লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২৫

২০
X