সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রশ্নফাঁসের সংবাদ প্রকাশের পর আলোচনা শুরু হয় সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) নিয়ে। এর পরই গ্রেপ্তার হন ১৭ জন। আলোচনায় থাকা বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারীর হদিস নেই। অনেকে দেশ ছেড়েছেন বলে আলোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সার্বিক বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন।
তার দাবি বিসিএসসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের সেট আগের রাতে জানা সম্ভব নয়। এটা আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবেন না।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি প্র্যাকটিক্যালি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সেট নির্ধারণের প্রক্রিয়া দেখাতে গিয়ে এমন দাবি করেন।
এ সময় বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস যে হয়নি, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন পিএসসি চেয়ারম্যান। তবে পিএসসি থেকে প্রশ্নফাঁস করা ‘ভীষণ কঠিন’ বলেও দাবি করেন তিনি।
চেয়ারম্যান সোহরাব বলেন, ‘প্রশ্নপত্রের সেট লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ হয়। লটারিতে কোন সেট আসবে, সেটাতো আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে প্রশ্নফাঁস খুবই কঠিন। তবে প্রশ্নফাঁস যে হয়নি বা হতে পারে না, তা শতভাগ নিশ্চিত করে বলা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, পিএসসির অধীনে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যিনি তৈরি করেন, তার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন থাকে। ১০ জনের কাছ থেকে প্রশ্ন পাওয়ার পর একদিন মডারেশনের জন্য বৈঠক হয়। গোপন কক্ষে সিলগালা করা সেই প্রশ্ন খুলে মডারেশন শেষে আবারও সিলগালা করে রাখা হয়। সেখান থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় প্রশ্ন প্রেসে যায়। প্রেস থেকে আসার পর পুলিশ প্রহরায় একটি কক্ষে তা তালাবদ্ধ থাকে।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার দিন দুজন বিশেষজ্ঞের উপস্থিতিতে পিএসসিতে লটারি হয়। সকাল ১০টায় পরীক্ষা হলে ৯টা ২০ মিনিট থেকে ৯টা ২৫ মিনিটে লটারি করে সাড়ে ৯টার মধ্যে কেন্দ্রে জানাতে হয়। বিসিএসের ক্ষেত্রে ছয় সেট থেকে একটি সেট লটারির মাধ্যমে বেছে নেয়া হয়। আর নন-ক্যাডার বা দশম গ্রেড ও তার পরের গ্রেডগুলোর জন্য ৪টি সেট থেকে লটারিতে একটি নেওয়া হয়।
পিএসসির যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ এসেছে, তাদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিবেন- এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, এখানে দুয়েকজন বোধহয় এরকমও আছে, যারা আগে এ ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে চাকরি হারিয়েছে। আবার তারা চাকরিতে ফিরে এসেছে। অনেকেই প্রশ্ন করছে তারা আবার ফিরে এলো কী করে বা আমাদেরও দোষী করছেন। তারা মূলত কোর্টে গেছেন এবং কোর্ট থেকে ছাড়া পেয়ে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। আর কেউ কেউ আছেন যাদের বিরুদ্ধে এবারই প্রথম অভিযোগ এসেছে। তবে, যে মুহূর্তে কোনো সরকারি কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হবে, সে মুহূর্তে তাকে সাসপেন্ড করা হবে। এ বিষয়ে আমরা প্রস্তুত আছি।
মন্তব্য করুন