দুই দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। আগামীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে তিনি তার দেশের আগ্রহের কথা জানান।
রোববার (৭ জুলাই) বিকেলে ঢাকায় সচিবালয়ে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
বৈঠকের বিষয়ে পিটার হাস বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বন্ধুত্ব, অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চায়। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান এভিয়েশন শিল্পের অংশীদার হওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলির আগ্রহ রয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে চলা বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং বাংলাদেশের কাছে তাদের উড়োজাহাজ বিক্রির যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটির অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। পাশাপাশি ইউরোপভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস থেকেও এই ধরনের প্রস্তাব পায় বাংলাদেশ। এরইমধ্যে এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কেনার নীতিগত সিদ্ধান্তও রয়েছে।
অবশ্য বৈঠকের বিষয়ে বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেছেন, বোয়িং নাকি এয়ারবাস কোন কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কেনা হবে-তা নির্ভর করছে মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর। মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উড়োজাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা নতুন উড়োজাহাজ কিনতে চাই। কারণ আমাদের বহর সম্প্রসারণের জন্য উড়োজাহাজ প্রয়োজন। বোয়িং এবং এয়ারবাস দুটি কোম্পানিই এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করছে। তারা তাদের প্রস্তাব বিমানের কাছে জমা দিয়েছে। প্রস্তাবটি বর্তমানে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি মূল্যায়ন করছে। মূল্যায়ন এখনো শেষ হয়নি। মূল্যায়ন শেষ হলে মূল্যায়ন কমিটি যে কোম্পানিকে সুপারিশ করবে আমরা সেখান থেকেই উড়োজাহাজ কিনব।
ফারুক খান বলেন, দুটি কোম্পানিই ভালো প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাব যাচাই বাছাই শেষে যেটি আমাদের জন্য ভালো হবে, যাতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত হবে, তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বৈঠকের বিষয়ে বিমানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে ক্যাটাগরি-১ এ উন্নীতকরণ ও ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়েও কথা হয়েছে। আমি বলেছি এটা আমাদের একটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি। সুতরাং এটির গুরুত্ব আমাদের কাছে অপরিসীম। আমরা দ্রুত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আশা করছি। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তারা আন্তর্জাতিক এভিয়েশন আইন ও তাদের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নিয়ম মেনে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। আমাদের দিক থেকেও কোনো কারণ নেই, যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকেও কোনো কারণ নেই। আগেও দেশের বিভিন্ন কেনাকাটায় যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি অংশ নিয়েছে। তখন হয়তো তারা কাজ পায়নি, হয়তো অন্য দেশের কোনো কোম্পানি কাজ পেয়েছে। তাতে তো সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়েনি। পণ্য কেনার ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান, দেশের আইন মেনে দেশের স্বার্থ যাতে রক্ষিত হয়, তার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন