একটা ব্যাংকের এমডি পদের জন্য একজন নোবেলজয়ী এত লালায়িত কেন- এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হুমকি দেওয়া হয়েছিল, এমডি পদ না থাকলে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘বলে দিয়েছিলাম, ড. ইউনূসকে নিয়ে কোনো মার্কিনির কথা শুনব না। দেখাও করব না। এমডি পদে থাকতে পারল না বলে হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে সেতুর টাকা বন্ধ করল। শেষ পর্যন্ত নিজেদের টাকায় করেছি।’
শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে পদ্মা সেতুর মাওয়াপ্রান্তে পদ্মা সেতুর প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
জ্ঞানী-গুণীদের বাধা সত্ত্বেও সব অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন আমরা বুক ফুলিয়ে গর্বের সঙ্গে চলছি। আগামী দিনে যত বাধাই আসুক, অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে যারা জড়িত, যারা জমি দিয়েছে, তাদের প্রতি ধন্যবাদ জানাতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।
তিনি বলেন, অতীতে বিদেশে বাংলাদেশের নামটা শুনলে কেউ জিজ্ঞাসা করত, এটা কী ভারতের কোনো অংশ? মিসকিন হিসেবে আমাদের হিসাব করা হতো। যেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আর সেই স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা থাকবে না, আমরা মাথা তুলে কথা বলতে পারব না, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না, এটা কী ধরনের বাংলাদেশ?
সমাপনী এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভাপতিত্ব করেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন। প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের সাহস দেখাতে পেরেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তে পর অনেকেই বিরোধিতা করেছিলেন। আমাকেও কথা শুনতে হয়েছে। কিন্তু আমি কিছু বলিনি।’
এর আগে দুপুর ৩টা ৫৩ মিনিটে সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতুর উত্তর থানা সংলগ্ন মাঠে এই সমাপনী অনুষ্ঠান ও সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিকেল ৩টা থেকে আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন। এই অনুষ্ঠানের জন্য দুই থেকে আড়াই হাজার সুধীজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন