বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিএনএস গ্রুপের দুটি কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলে প্রথমে কদম ফোয়ারর বাধা দেয় পুলিশ। সেই বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি পুনরায় যাত্রা শুরু করলে পুলিশ মৎস্য ভবনের সামনে আটকে দেয়। বাধার মুখে সড়কে প্রতিবাদ সমাবেশ করে একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান। বাকি শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিলসহ শ্রমভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, গাজীপুরে অবস্থিত এমএনএইচ বুলুর মালিকানাধীন বিএনএস গ্রুপের দুটি কারখানা ন্যাশনাল কেমিক্যাল ম্যানুফেকচারিং কোং লি. এবং এবিকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিসিটেডে কর্মরত শ্রমিকদের যথাক্রমে ৫ মাস ও ৩ মাসের বকেয়া বেতন এবং ঈদ বোনাস পরিশোধ না করে কারখানা দুটি বেআইনিভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। মালিক কারখানার ইউনিয়ন নেতাদের ব্যাংক লোন করে দিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছেন- যা ট্রেড ইউনিয়নের এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ। ইতোপূর্বে কারখানা দুটির শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য শ্রম প্রতিমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার উদ্যোগ নিয়েও এখনো বিষয়টি সমাধান করতে পারিনি।
স্মারকলিপি পেশের আগে প্রেস ক্লাবের ন্যাশনাল কেমিক্যাল ম্যানুফেকচারিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মাফুজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রমিকনেতা কাজী রুহুল আমিন, আমিনুল ইসলাম, মো. রাসেল মিয়া ও মো. আব্দুল আলী।
নেতারা বলেন, বেতন না পেয়ে শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেক শ্রমিক পরিবারকে বাড়িওয়ালা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। অর্থাভাবে অনেক শ্রমিকের সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় বাবুল মিয়া নামের একজন শ্রমিক অর্থাভাবে এবং কষ্টের যন্ত্রণায় ঈদের দিনই মৃত্যুবরণ করেছেন বলে সমাবেশে জানানো হয়।
সমাবেশ থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঢাকায় শ্রম ভবনে অবস্থানসহ নানামুখী আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া স্মারকলিপির অনুলিপি শ্রম প্রতিমন্ত্রী, শ্রম সচিব, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের মহাপরিচালক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, ঢাকা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক, জেএমপি পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রেরণ করা হয়।
মন্তব্য করুন