হজম না হওয়ার সমস্যা আমাদের অনেকেরই হয়ে থাকে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন আমাদের হজম প্রক্রিয়ায় বেশ প্রভাব ফেলে। খাবার সঠিকভাবে হজম না হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হওয়া অনেক জরুরি।
বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষের জীবনযাত্রা অনিয়ন্ত্রিত। অনেকেই সঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া করেন না। আবার সঠিক সময়ে খেলেও সেটা দেখা যায় বাইরের খাবার। এ জন্যই অনেকের হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই এ বিষয় নিয়ে সবাইকে সচেতন হওয়া দরকার।
হজমের সমস্যা হলে ডায়রিয়া, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতা, অপুষ্টিসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এসব সমস্যা দেখা দিলে ছুটে চলে যায় ওষুধের দোকানে। সেখান থেকে ওষুধ কিনে এসব সমস্যার সমাধান করতে চায়। কিন্তু এগুলো সাময়িকভাবে হলেও পরে দেখা যায় এ সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
শরীর সুস্থ রাখতে হজমশক্তি খুবই জরুরি। হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সেটার প্রভাব পুরো শরীরের ওপর পড়ে। হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে ওজন বেড়ে যাওয়া, লিপিড প্রোফাইল বেড়ে যাওয়া, ইউরিক এসিড বেড়ে যাওয়া, রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার মতো শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হজম প্রক্রিয়া তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। কী খাবার খাওয়া হচ্ছে, সেই খাবার পরিপূর্ণভাবে হজম হওয়া এবং হজমের পর সেটা দেহে শোষণ হওয়া। এই তিন ধাপই আমাদের দেহের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
হজম ক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সে সম্পর্কে আমাদের সবারই কমবেশি জানা উচিত। তাই চলুন, জেনে নেওয়া যাক ঘরোয়া উপায়ে যেভাবে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করবেন—
জোয়ান অনেকেই জানেন, জোয়ান পেটের জন্য বেশ ভালো একটি উপাদান। জোয়ান খেলে হজমের ক্ষমতা বাড়ে। এ জন্য একটি পাত্রে কিছুটা জোয়ান নিন এবং তাতে হালকা গরম পানি ঢেলে তা পান করুন। এই পানি পান করার পর ১০-১৫ মিনিট হাঁটন। দেখবেন, পেটে গ্যাসের সমস্যা দূর হয়েছে। এমনকি পেট ফাঁপার সমস্যার সমাধান হবে।
বজ্রাসন ব্যায়াম শরীরের জন্য উপকারী। তাই খাওয়ার পর যদি আপনি ব্যায়াম করতে পারেন, তাহলে পেটের সমস্যা অনেকটাই দূরে হয়ে যায়। এমনি একটি ব্যায়ামের নাম বজ্রাসন। এ ব্যায়াম হজম শক্তি বাড়িয়ে দিতে পারে। খাওয়ার পর ১০-১৫ মিনিট বজ্রাসনে বসে যান। প্রথমে এতটা সময় না পারলে কিছুটা সময় বসুন। তারপর ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ে তুলুন।
হাঁটাহাঁটি করা হাঁটাহাঁটি করার মতো উপকারী ও সহজ ব্যায়াম আর একটিও নেই। তাই তো বিশেষজ্ঞরা বেশি বেশি হাঁটার কথা বলে থাকেন। তবে গ্যাস, পেট ফাঁপার সমস্যা কমাতে চাইলে আপনাকে ধীরে ধীরে হাঁটতে হবে। খাওয়ার পর অন্তত ৩০-৪০ মিনিট ধীর গতিতে হাঁটুন। এতে পেট ভালো হওয়ার পাশাপাশি হাড়ও শক্ত হবে।
খাবার হজমের ক্ষমতা বাড়াতে হলে অবশ্যই খাবারের দিকে সচেতন থাকতে হবে। শাক রান্নার সময় অবশ্যই তেল দিয়ে রান্না করতে হবে। আর মাংসজাতীয় কিছু খাবার খেলে তার সঙ্গে যেন লেবু থাকে, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। আর প্রতিবার খাওয়া শুরুর আগে জিহ্বাতে একটু অল্প লবণ দিয়ে খাবার খেলে সেটিও হজমে সহায়তা করে।
পর্যাপ্ত ঘুম পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হজম প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটতে পারে। রাত জেগে থাকলে হজমের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, রাত জেগে থাকলে মানুষের সব ইন্দ্রিয় কাজ করে তখন শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হয়, তখন হজম প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি হয়। তাই হজম শক্তিকে বাড়াতে হলে পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি।
মন্তব্য করুন