চুল পড়ার সমস্যা আমাদের সবারই কমবেশি আছে। চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে খ্যাদাভ্যাস ও স্ট্রেস। কিন্তু কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ সমস্যা একটু বেশি হয়। তখন তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় চুল পড়তে পড়তে ধীরে ধীরে টাক হয়ে যাচ্ছে।
দিনে অন্তত ১০০টা চুল পড়া স্বাভাবিক ধরে নেয়া যায়। কারণ, সারা দিনে ৫০-১০০টি চুল পড়তেই পারে। কিন্তু বিপত্তি বাধে তখন যখন চুল পড়ার পরে আর ওঠে না। বরং উল্টো বেশি বেশি চুল পড়তে থাকে।
চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এমন কিছু জিনিস ব্যবহার করা জরুরি যা, চুল পড়া কমায় এবং চুলের বৃদ্ধিও বাড়ায়। চলুন জেনে নেই চুল পড়া কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়, যার মাধ্যমে আপনি এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
১. জিনগত সমস্যা চুল পড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। কোনো মহিলা বা পুরুষের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বয়সের পরেই যদি চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে তাদের বংশে এ বিষয়টি আগেও দেখা গেছে। তখন সেটিকে বংশগত সমস্যা বলেই ধরা যেতে পারে।
২. শরীরে হরমোনের হঠাৎ পরিবর্তনের কারণেও চুল ওঠার সমস্যা হতে পারে। সে কারণে অনেক নারীরা প্রেগনেন্সি বা প্রেগনেন্সির পরে চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। কারণ, গর্ভাবস্থা, প্রসব বা মেনোপজের পরও হরমোনের তারতম্যের কারণেও চুল পড়তে পারে।
৩. শারীরিক কোনো সমস্যা বা কঠিন রোগেও চুল পড়ে যেতে পারে।
৪. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে চুল পড়তে পারে।
৫. চুলের ত্বক (স্ক্যাল্প) অপরিষ্কার রাখলে ও তাতে কোনো ইনফেকশন হলে চুল পড়তে পারে।
১. মাথার সামনের দিকে এবং স্ক্যাল্পে চুলের ঘনত্ব কমতে শুরু করলে বুঝবেন অতিরিক্ত চুল পড়ছে। ২. ভ্রুর চুল কিংবা চোখের পাতা, সব জায়গায় যদি চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে অতিরিক্ত চুল পড়ছে। ৩. মাথার ত্বকে খুশকির সমস্যা বেড়ে গেলে বা স্ক্যাল্প ইনফেকশন হলে অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে।
কয়েকটি ঘরোয়া উপায়েই সমাধান হতে পারে এই চুল পড়ার সমস্যা। জেনে নিন সেই উপায়গুলো কী কী—
প্রাচীন যুগ থেকেই চুলের যত্নের অন্যতম উপাদান হিসেবে নিমের পাতার তেল ব্যবহার হয়ে আসছে। এমনকী আয়ুর্বেদেও নিমকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ, নিমে উচ্চমাত্রায় ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। যা স্ক্যাল্পের জন্য খুবই প্রয়োজন। এটি স্ক্যাল্পে অতিরিক্ত তেল উৎপাদন বন্ধ করে চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে।
প্রথমে ১০-১২টা নিমপাতা নিয়ে সেগুলো বেটে পাতা থেকে নির্যাস বের করে নিন। এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে স্ক্যাল্পে কাজ করবে। নিমপাতার এই মিশ্রণের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল বা নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। সেটি সামান্য গরম করে নিয়ে স্ক্যাল্পে মাসাজ করেন।
নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজের রস খুব কাজ করে। এটি স্ক্যাল্পের কোনো ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজের রসে থাকা উপাদান চুল ঘন করে। কারণ, এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস।
একটি বড় পেঁয়াজ নিয়ে তা থেকে রস বের করে নিন। সেই রস আপনি সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগাতে পারেন। আবার চুলেও লাগাতে পারেন। সেই সঙ্গে চুলের ডগাতেও লাগাতে ভুলবেন না। পেঁয়াজের রস স্ক্যাল্পে লাগানোর সময় হালকা মাসাজ করতে পারেন। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এক মাস পর নিজেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
চুল পড়া বন্ধ করে জবা ফুল। সেই সঙ্গে চুলের সমস্যা, খুশকি, শুষ্কতা, থেকে চুলকে রক্ষা করে। চুলকে ঘন এবং শক্তিশালী করে তুলতে জবা ফুল খুবই উপযোগী। জবা ফুল প্রাকৃতিক উপাদান। তাই যে কোনোভাবে এটি চুলে ব্যবহার করা যায়। চুল সহজেই ভেঙে যাওয়া রোধ করে এই ফুল।
সাতটি জবা ফুল ও সমপরিমাণ পাতা নিন। আধ কাপ নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। তেল ঠান্ডা হওয়ার পর সেই তেল স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন। সঙ্গে চুলেও লাগিয়ে নেবেন। আধা ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
মন্তব্য করুন