দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় সাধারণত ডিম রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কারণ ডিমকে প্রোটিনের অন্যতম সেরা উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রতিটি ডিমে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তবে প্রকৃতিতে এমন কিছু শাক-সবজি রয়েছে যাতে প্রোটিনের পরিমাণ ডিমকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
পুষ্টিবিদরা জানান, প্রোটিন সমৃদ্ধ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি প্রতিদিনের প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। এটি অতিরিক্ত ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও সরবরাহ করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন শাক-সবজিতে ডিমের থেকে বেশি প্রোটিন থাকে-
পালং শাক
প্রোটিনের অন্যতম উৎস পালক শাক। এটিকে পুষ্টির একটি পাওয়ার হাউস এবং প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এক কাপ রান্না করা পালং শাকে প্রায় ৫.৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে, কিন্তু প্রতি ১০০ গ্রামে পরিমাপ করলে, এতে প্রায় ২.৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তবে, যেহেতু পালং শাক রান্না করলে সঙ্কুচিত হয়, তাই আপনি সহজেই একাধিকবার খেতে পারেন।
পালং শাকে প্রোটিনের পাশাপাশি আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন এ, সি এবং কে সমৃদ্ধ। এই পুষ্টি উপাদানগুলো হাড়ের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখে। পালং শাক পনির, ডাল পালং শাক এবং পালং পরোটার মতো খাবারের একটি সাধারণ উপাদান।
সজনে ডাটা
সজনে ডাটায় প্রচুর প্রোটিন থাকে। প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের মধ্যে অন্যতম। সজনে ডাটা আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টেও ভরপুর যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
ব্রোকলি
অনেকেই জানেন ব্রোকলি ফাইবার এবং ভিটামিন উপাদানের অন্যতম উৎস। তবে এটি একটি প্রোটিন উৎসও বটে। প্রতি ১০০ গ্রাম ব্রোকলিতে প্রায় ২.৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এক কাপ কুচি করে রান্না করা ব্রোকলিতে প্রায় ৫.৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা একটি ডিমের চেয়ে বেশি। এ ছাড়াও ব্রোকলিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফোলেট এবং পটাসিয়াম থাকে। এটি হৃদরোগ, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। ব্রোকলির প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই সবজি দিয়ে ভাজা, তরকারি বা মিশ্র উদ্ভিজ্জ খাবার তৈরি করে খেতে পারেন।
মাশরুম
আশ্চর্যজনকভাবে বেশ উচ্চ মাত্রার প্রোটিন থাকে মাশরুমে। কাঁচা মাশরুমে প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৩.১ গ্রাম প্রোটিন থাকে, তবে রান্না করা মাশরুমে পানির ক্ষয় হওয়ার কারণে আরও বেশি ঘনত্ব থাকে। এক কাপ রান্না করা মাশরুম প্রায় ৫-৭ গ্রাম প্রোটিন সরবরাহ করতে পারে। মাশরুম ভিটামিন বি, সেলেনিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি চমৎকার উৎস। এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সম্ভাব্য ক্যান্সার-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
মটরশুঁটি
মটরশুঁটি সেরা উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন উৎসের মধ্যে একটি। এক কাপ রান্না করা মটরশুঁটিতে প্রায় ৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা একটি ডিমের চেয়েও বেশি। প্রতি ১০০ গ্রামে মটরশুঁটিতে প্রায় ৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রোটিন ছাড়াও মটরশুঁটিতে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন কে এবং ফোলেট থাকে। এটি হজম, হৃদরোগের স্বাস্থ্য এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা সুষম খাদ্যতালিকায় একটি চমৎকার সংযোজন।
মন্তব্য করুন