বিয়ে একটি সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি। যেটি একজন নারী এবং একজন পুরুষ বৈধভাবে একসঙ্গে থাকার আনুষ্ঠানিকতা। বিয়ের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী নামক মধুর সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। আর এই স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে দম্পতি বলা হয়। দম্পতিদের এই বিবাহবার্ষিকীর দিনটি প্রতিবছর একবার আসে। যেটি প্রত্যেক দম্পতির পালনের স্বপ্ন থাকে। বছরের অন্যান্য দিনগুলোতে বিয়ে নিয়ে আর কারও তেমন উচ্ছ্বাস দেখা যায় না।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে ২৬ জানুয়ারি পালিত হচ্ছে ‘সম্পতি দিবস‘ বা ‘ন্যাশনাল স্পাউস ডে’ । এই দিবসটির প্রচলন কবে থেকে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয় কোনো বিবাহিত দম্পতিই এই দিবসের প্রবর্তক হবেন। এ দিবসটি ছাড়াও স্ত্রী এবং স্বামীদের জন্য আলাদা আলাদা দিবস রয়েছে।
২০০০ সালে এই দিবসটি পালন শুরু হয়। ১৯৮৪ সালে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান ‘সামরিক দম্পতি দিবস’ উদ্ভাবন করেছিলেন। যারা সামরিক বাহিনীতে চাকরি করেন। পরিবার থেকে দিনের পর দিন দূরে থাকেন। তাদের জন্যই মূলত দিবসটির উদ্ভাবন করা হয়। তবে পরবর্তীতে তা সব পেশার মানুষের জন্যই করা হয়। এ দিবসের এত জনপ্রিয়তা, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে দিনটিকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়।
তবে ২৬ জানুয়ারি দিনটি একেক দশকে একেক দিবস হিসেবে পালিত হয়েছে।
১৮৫০ এর দশকে এই দিনে বলা হত ‘ইট মাস্ট হ্যাভ বিন লাভ’। কারণ তখন দম্পতিরা আশ্রয়, সুরক্ষা এবং খাবারের জন্যই মূলত বিয়ে করতো।
১৯৮০ এর দশকে বলা হত ‘ভিশন অব লাভ’ বা প্রেমের দর্শন। মূলত, এই সময়েই জাতীয় স্বামী-স্ত্রী দিবসের সূত্রপাত। তবে দিনটি প্রমিক-প্রেমিকা, বাগদত্ত-বাগদত্তা এবং নববিবাহিতরাও পালন করতে পারবেন।
১৯৯৪ সালের বলা হত ‘উই ফাউন্ড লাভ’ বা আমরা ভালোবাসার খোঁজ পেয়েছি। ওই বছরেই জাপানে ‘ভাল স্বামী-স্ত্রী দিবস’ পালন শুরু হয়। ২০২০ সালে এসে বলা হয় ‘মাই হার্ট উইল গো অন’ অর্থাৎ আমার হৃদয় তোমার জন্য রইবে।
একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ মিনিট সঙ্গীর হাত ধরে রাখলে বা তাকে জড়িয়ে ধরলে এমন কয়েকটি হরমোন নিসৃত হয় যা আনন্দ দেয়, সুখী বোধ করায় এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্ত করে।
শুধুমাত্র দম্পতিদের জন্যই নয়, দিবসটি গণমাধ্যমেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে মজাদার সব তথ্য আর জরিপের জন্য। এমনই এক জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২০ লাখ দম্পতির মধ্যে ১৭ শতাংশই এমন যাদের পূর্বে একবার বিয়ে হয়েছে। তাদের কাছে এই দিনটি শুধুমাত্র একটি দিন নয় বরং সঙ্গীকে অনুভূতি প্রকাশের একটি বিশেষ দিন।
বিশেষ দিনটি বিশেষ করার কিছু টিপস :
এই দিনটি আপনার বিশেষ মানুষের সঙ্গে আরও স্মরণীয় করে রাখার কিছু টিপসও দিয়েছেন বিখ্যাত সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
১. প্রথম পরিচয়ের জায়গাটিতে ঘুরে আসতে পারেন।
২. স্বামী বা স্ত্রীর পছন্দের খাবারটি রান্না করতে পারেন।
৩. বিয়ের দিনটির কথা স্মরণ করে মজাদার গল্পগুলো করতে পারেন।
৪. এই দিনটি আপনার ভালোবাসার স্মারক। তাই সঙ্গীকে আরেকবার বুঝিয়ে দিন আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন।
তবে প্রমিক-প্রেমিকা, বাগদত্ত-বাগদত্তা এবং নববিবাহিতদের মন খারাপের কিছু নেই। কারণ, দিনটি তাদের জন্যও অন্তর্ভুক্ত। এই দিনটি মোটেও বৈষম্যমূলক নয় এবং কেবল বিবাহিত দম্পতির জন্য নয়। তাই আর দেরি না করে আপনার বিশেষ মানুষটিকে এখনই জানিয়ে দিন তার বিশেষত্ব।
মন্তব্য করুন