পরস্পর ঝগড়া বিবাদ ও অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্যজনের কাছে বলাই হচ্ছে চোগলখুরি। চোগলখুরির ফলে মানুষের সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং তাদের মাঝে হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতার বহ্নিশিখা জ্বলে ওঠে।
হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ওহে, আমি কি তোমাদের জানাব চোগলখুরি কী? চোগলখুরি হচ্ছে ‘মানুষের মাঝে কথা চালাচালি।’ (মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চোগলখুরি বিষয়ে বলেন, ‘চোগলখোর ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)
বর্তমান সময়ে চোগলখুরির ভয়াবহ অভিশাপে পারিবারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীতে অশান্তি ও কলহ বিরাজ করছে। কর্মস্থলে কিংবা অফিসে কর্মী-দায়িত্বশীলদের মাঝে বিরূপ মনোভাবও তৈরি হয় চোগলখুরির কারণে।
চোগলখুরি মারাত্মক খুবই নিন্দীয় কাজ। তাই কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা চোগলখুরির বিষয়টি তুলে ধরে তা থেকে বিরত থাকার জন্য মানুষকে এভাবে নসিহত করেন-
‘আর অনুসরণ কর না তার; যে কথায় কথায় শপথ করে; যে লাঞ্ছিত। পেছনে নিন্দাকারী; যে একের কথা অপরের কাছে লাগিয়ে বেড়ায় যে কল্যাণের কাজে বাধা দান করে, যে সীমালঙ্ঘনকারী, পাপিষ্ঠ।’ (সুরা কলাম : আয়াত ১০-১১-১২)
চোগলখোরকে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘দুর্ভোগ প্রত্যেকের যে, পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে।’ (সূরা-১০৪ হুমাযাহ, আয়াত-১)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন সবচেয়ে খারাপ লোকদের দলভুক্ত হিসেবে ওই ব্যক্তিকে দেখতে পাবে যে ছিল দু’মুখো; যে একজনের কাছে এক কথা আরেকজনের কাছে ভিন্ন কথা নিয়ে হাজির হতো।’ (মুসলিম)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, চোগলখুরি করা থেকে বিরত থাকা। চোগলখুরির মতো হারাম এবং কবিরাহ গুনাহ থেকে বিরত থাকা। চোগলখুরির অপরাধে জড়িয়ে জান্নাত থেকে বঞ্চিত না হওয়া।
মন্তব্য করুন