সিয়াম সাধনার মাস রমজান। আজ (সোমবার) চাঁদ দেখবে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। আকাশে রমজানের চাঁদ দেখা গেলে ভোররাতে সেহরি খেয়ে দিনভর খাদ্য ও পানীয় বর্জন করে সংযম পালন করবেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা। এ সময়টা যেহেতু অনেক লম্বা, সে ক্ষেত্রে কী খেলে দিনটা ভালো কাটবে, তা জানা জরুরি।
অতিভোজন নয়
সেহরিতে উঠে আমাদের প্রথম মনে হতে পারে সারা দিন কিছু খাব না! একটু বেশি করে খেয়ে নিই।
এই কারণে অনেকের খাবারে ম্যানুতে ভাত বা রুটি, সঙ্গে প্রচুর শাকসবজি থাকে। মাছ-মাংসের সঙ্গে অনেকে ডিমও রাখেন। এসব ক্ষতিকর খাবার দিয়ে আপনি শরীরের প্রথম কষ্ট শুরু করলেন।
খাদ্যতালিকা
তো সেহরিতে কী করবেন? সেহরিতে আপনি এমন খাবার খাবেন যেন সারা দিন আপনি সুস্থ এবং প্রাণবন্ত থাকেন। সারা দিন পিপাসার কষ্ট যদি আপনি না পেতে চান, সারা দিন যদি ঝরঝরে থাকতে চান, তাহলে সেহরিতে আমিষ বা প্রোটিন খাওয়া বন্ধ করুন। মাছ, মাংস, ডিম বন্ধ রাখুন। যদি খেতে ইচ্ছে হয় তাহলে ইফতারে খেতে পারেন।
তাহলে কী খাবেন সেহরিতে আর কী বর্জন করবেন?
সেহেরিতে খুব হালকা খাবার। স্টোমাকের (পাকস্থলি) জন্য সফট, দেহের জন্য সফট এবং আপনার জন্য হেলদি। কী খাবার? আপনি অল্প একটু ভাত নেন এবং সবজি নেন। তারপর পানি পান করুন। হয়ে গেল আপনার সেহরি অথবা আপনি দুই-তিনটা খেজুর নিন। একটা বা দুটো কলা নিন। ব্যস। তারপর পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
এর বাইরে এক বা দুই মুঠো চিড়া ভিজিয়ে রাখুন। এর সাথে টক দই দিয়ে, খেজুরের গুড় মিশিয়ে চমৎকারভাবে চিড়া, টক দই খেয়ে ফেলুন।
সারা বছর যেন আমার ইমিউন সিস্টেম (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) তরতাজা থাকে, ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ যেন করতে পারি, সেই জন্য সেহরিতে প্রত্যেক রাত্রে এক কোয়া কাঁচা রসুন এবং আদা চা চামচ কালোজিরা খাবারের সাথে মিশিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলেন। আর পর্যাপ্ত পানি পান করুন সঙ্গে।
আপনার যদি অনেক ওজন বেশি থাকে, আপনার যদি টাইপ টু ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে আপনি কী করতে পারেন? ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং আপনি রাখতে পারেন সপ্তাহে তিন দিন। তাহলে পুরো রমজানজুড়ে ১২ কে ১৪ দিন আপনি ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং। কীভাবে? সেই ক্ষেত্রে আপনি সেহরি করবেন শুধু পানি দিয়ে। পর্যাপ্ত পানি পান করবেন। এটাই হলো আপনার জন্য সেহরি, আবার ইফতার। পরের দিন ভোররাত্রে পানি, আবার ইফতার। এই ২৪ ঘণ্টা ফাস্টিং সপ্তাহে তিন দিন। পরপর তিন দিন। আবার চার দিন নরমালি। নরমাল সেহরি ইফতার। আবার পরপর তিন দিন ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং।
সম্প্রতি দুটি গবেষণা বলছে, সপ্তাহে তিন দিন ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং আপনার ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স রিভার্স করে আপনার টাইপ টু ডায়াবেটিস নিরাময় করতে সক্ষম হবে।
পরামর্শে: ডা. মনিরুজ্জামান মনোদৈহিক ও জীবনযাপনবিষয়ক রোগের থেরাপিস্ট এবং কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাবের কোঅর্ডিনেটর।
মন্তব্য করুন