খাদ্যগ্রহণের মাধ্যমে মানুষ বেঁচে থাকলেও কিছু খাবার রয়েছে যা সরাসরি মৃত্যু ঘটাতে পারে। অথবা হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ। অথচ এই খাবারগুলো না জেনেই আমরা প্রতিনয়তই খেয়ে থাকি। একনজরে দেখে নেওয়া যাক এ ধরনের কিছু খাবার এবং জেনে নেওয়া যাক কেন এগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ-
পটকা মাছ
পটকা মাছ বা পাফার ফিশ বাংলাদেশের পাশাপাশি চীন, জাপান, ও কোরিয়াতেও জনপ্রিয়। তবে, এই মাছ সঠিকভাবে প্রসেস না করলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে। পটকা মাছে টিউরোটক্সিন নামক একটি বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা সায়ানাইডের তুলনায় অনেক বেশি মারাত্মক। এই মাছের বিষাক্ত অংশটি দক্ষতার সঙ্গে আলাদা করে না ফেললে তা মানুষকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দিতে পারে।
মাশরুম
বিশ্বের অনেক দেশে মাশরুম পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে পরিচিত। তবে, এর বিভিন্ন জাতের মধ্যে কিছু কিছু প্রজাতি মারাত্মক বিষাক্ত হতে পারে। বাংলাদেশে বুনো মাশরুম খাওয়া বিপজ্জনক। কারণ এগুলোতে এক ধরনের ছত্রাক থাকে, যা লিভার ও কিডনির জন্য ক্ষতিকারক। তাই, পরিচিত জাতের বাইরে মাশরুম গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
খেসারি ডাল
বাংলাদেশে খেসারি ডালও জনপ্রিয়। কিন্তু এতে বোয়া নামের একধরনের অ্যালানাইন অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা স্নায়ুবিক পঙ্গুত্ব ঘটাতে পারে। এই রোগের লক্ষণ হঠাৎ দেখা দিতে পারে এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে হাঁটার সমস্যাসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
আলু
আলুতে শেকড়ের জন্ম হলে গ্লাইকোঅ্যালকালোইড নামের একটি বিষাক্ত উপাদান তৈরি হয়। দীর্ঘদিন আলু সংরক্ষণ করলে এই উপাদানটির মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া, আলুতে সবুজ রঙের কারসিনোজেনিক উপাদান থাকতে পারে, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। তাই শেকড়সহ বা সবুজ আলু খাওয়া উচিত নয়।
কাঁচা টমেটো
টমেটো গাছের পাতা ও কাণ্ডে অ্যালকালাই নামের একটি উপাদান থাকে, যা পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কাঁচা টমেটোতে এই উপাদান থাকে, যা পাকস্থলীর ক্ষতি করতে পারে। তাই কাঁচা টমেটো না খেয়ে ভালভাবে রান্না করে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কাজু বাদাম
কাজু বাদামের তেতো জাতের ভেতর সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড থাকে। যা শরীরে হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি করতে পারে। কাঁচা অবস্থায় তেতো কাজুবাদাম খেলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আপেল
আপেলের বিচির মধ্যে সায়ানাইড থাকে। অধিক পরিমাণে আপেল বিচি খেলে শরীরে মারাত্মক বিষ তৈরি হতে পারে। যা মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম। আপেলের বাকি অংশ পুষ্টিকর হলেও বিচি খাওয়া একেবারেই নিরাপদ নয়।
মটরশুঁটি ও শিমের বিচি
মটরশুঁটি ও শিমের বিচিতে ফাইটোহেমাগ্লুটিনিন থাকে যা রান্না না করলে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এগুলো রান্নার আগে ১৫ মিনিট ধরে পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি ফেলে দিতে হবে।
ডিম
ডিম পুষ্টিকর হলেও কাঁচা বা আধা সেদ্ধ ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে অন্ত্বঃসত্ত্বা নারীদের জন্য এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ক্যানড বা প্রসেসড ফুড
ক্যানড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ করলে ডায়রিয়া, ক্যানসার ইত্যাদি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। এসব খাবারের মান নিশ্চিত না হলে সেগুলি খাওয়া উচিত নয়।
মন্তব্য করুন